বই রিভিউ ও ডাউনলোড
চরিত্রহীন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় PDF Downlolad (রিভিউ)
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর চরিত্রহীন উপন্যাস PDF Downlolad রিভিউ:
সেকালের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একবার ‘চরিত্রহীন’ হয়েছিলেন। স্বজ্ঞানে ও সুস্থ মস্তিষ্কে নিজের মুখে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি চরিত্রহীন’। তবে মজলিশি আড্ডায় নিজেকে কেন ‘চরিত্রহীন’ বলে কড়া পেটাতে হলো চরিত্রহীন উপন্যাসের স্রষ্টা শরৎচন্দ্রকে? কেউ বলতে পারেন, তিনি ১৯১৭ সালে চরিত্রহীন নামে উপন্যাস লিখেছিলেন না, এটা তার খেসারত।
আসলেই কি তাই?
তখন চরিত্রহীন মাত্রই বাজারে এসেছে। এসেই বাজিমাত। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা, পাঠকদের মুখে মুখে শরৎবাবুর নাম। এরই মধ্যে ‘কল্লোলিনী কলিকাতা’য় ঔপন্যাসিক হিসেবে আবির্ভূত হলেন আরেক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। চরিত্রহীন বের হওয়ার পরপর এই শরৎচন্দ্র
বাজারে ছাড়লেন চাঁদমুখো নামে এক উপন্যাস। এই শরৎচন্দ্র আগে ছিলেন গল্পলহরী পত্রিকার সম্পাদক। লেখালেখি শুরু করেন পরে। কিন্তু একটা লিখে থামলে তো হয়, ওই শরৎচন্দ্র অতি দ্রুত লিখলেন তিনটি উপন্যাস—চাঁদমুখো, হীরের দুল ও শুভলগ্ন। ফলে পাঠক-সমালোচকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল বিভ্রান্তি—কে আসল আর কে নকল শরৎচন্দ্র। এ পরিস্থিতিতে ‘বিরাট ফাঁপরে’ স্বয়ং ‘চরিত্রহীন’ শরৎচন্দ্রও ছিলেন। একদিন এক আড্ডায় তাঁর সঙ্গে দেখা হলো এক বন্ধুর। বন্ধুটি বেজায় রসিক। রস করেই তাঁকে বললেন, বাংলায় তো শরৎ এখন দুজন; তো হে, আপনি কোনজন? শরৎবাবুও তো রসের সাগর। তৎক্ষণাৎ তিনি জবাব বাতলালেন, ‘আমি “চরিত্রহীন” শরৎচন্দ্র!’
শরৎ সেদিন তাঁর উপন্যাসের নামের সঙ্গে নিজের নাম যুক্ত করে বলেছিলেন বটে, তবে এরপর শরতের ‘চরিত্রহীন’ বিশেষণ আশপাশে বেশ ছড়িয়েছিল।
নিজেকে নিয়ে তুমুল রসিকতা করতেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। একবার এক আসরে শরৎচন্দ্রকে উদ্দেশ করে রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘তোমার জীবন সম্বন্ধে লোকের বড় কৌতূহল, আমার জীবনস্মৃতির মতন তোমার জীবনের কথা লেখো শরৎ!’
শরৎচন্দ্র কৌতুক করে বললেন, ‘না না, তা লেখা যায় না। আমার জীবন তো ভালো নয়। আগে বুঝতে পারিনি এত বড় হব, তবে নাহয় বুঝে-সমঝে ভালো হয়ে চলতাম।’
সূত্র: সাগরময় ঘোষের সম্পাদকের বৈঠকে ও শান্তা শ্রীমাণির মনীষীদের রসিকতা.