তালেবানের ইতিহাস Pdf Download (Full)
তালেবানের ইতিহাস Pdf book free download করতে পোস্ট করতে পারেন। পোস্টটিতে আমরা তালেবান নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করব এবং পাশাপাশি আপনাদের কি ফ্রি এপ ডাউনলোড লিং দিয়ে সহায়তা করব।
আপনারা ইতিমধ্যে জানেন যে তালেবানের অবস্থানকৃত স্থানটি হচ্ছে আফগানিস্থান। আর এই কারনেই সমগ্র আফগানিস্তান দূরে যুদ্ধ লেগে আছে, মানুষ মরছে।
আরো পড়ুন:-
ইংরেজীতে খুব সুন্দর একটা শব্দ আছে, “melancholy” যার বাংলা আভিধানিক প্রতিশব্দ হলো “ বিষণ্ণতা ”। কিন্তু, বিষণ্ণতা শব্দটা melancholy এর উপর সঠিক বিচার করতে পারেনা। কোন কারণ ছাড়াই অযথা মন খারাপ, শূণ্যতার মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করার অনুভূতিই হচ্ছে melancholy। বেশিরভাগ মানুষই কম বেশী এমন অনুভূতির সাথে পরিচিত। হারুকি মুরাকামির নরওয়েজিয়ান উড তেমনই এক বিষাদময়, melancholic একটি বই। এটি লেখকের প্রকাশিত পঞ্চম বই যার নামটি নেয়া হয়েছে বিখ্যাত ব্যান্ড বিটলসের একই শিরোনামের একটি গান থেকে।
বইটি ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় ও প্রকাশের সাথে সাথে এটি জাপানে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় ও বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। মুরাকামি সাধারণত পরাবাস্তব লেখা লিখতে পছন্দ করেন। তার চরিত্ররা বাস্তব, অবাস্তব দুই জগতেই অবাধে বিচরণ করে। কিন্তু নরওয়েজিয়ান উড উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। এই বইয়ের চরিত্ররা ও গল্প সবই অতিমাত্রায় বাস্তব। মুরাকামি নিজে বলেন কাজটা তিনি ইচ্ছা করেই করেছেন; তিনি শুধু পরাবাস্তব লেখাই লিখতে পারেন এমন মিথ ভুল প্রমাণ করার জন্যই নাকি উপন্যাসটি লেখা। বলাই বাহুল্য তিনি এই মিথ খুব ভালোভাবে ভেঙ্গে সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন।
আমি বাতিঘর থেকে প্রকাশিত এই বইয়ের বঙ্গানুবাদটি পড়েছি। বইটি হাতে নিলে প্রথমেই মনে হয় বাহ, বইটা অনেক সুন্দর তো! সব্যসাচী মিস্ত্রির করা প্রচ্ছদ বইটির ভাবার্থের সাথে মিশে গেছে। আর, বাতিঘরের গুণমান নিয়ে তো কোন কথাই হবে না। বরাবরের মত বইয়ের বাঁধাই, ছাপা ও কাগজের মান সবই একদম উৎকৃষ্ট।
আলভী আহমেদের অনুবাদ তো একদম মাখনের মত মসৃণ! পড়ার সময় মনেই হয় না যে এটা অন্য কোন অনুবাদ, মনে হয় লেখকের নিজের বইই বুঝি এটা। বিশেষ করে আলভী আহমেদের শব্দচয়ন অনেক ভালো ছিল।
শুধুমাত্র শব্দচয়নের জন্যই অনেক অনুবাদ কাঠখোট্টা মনে হয় পড়ার গতি শ্লথ হয়ে যায়; আবার অনেক সময় দেখা যায় অনুবাদকেরা ইংরেজী শব্দ একেবারে বর্জন করে ফেলেন এর স্বাভাবিক অনেক বাক্যও কেমন উদ্ভট শোনায়। আলভী আহমেদ এইদিকেও খেয়াল রেখেছেন, ক্ষেত্রবিশেষে তিনি শব্দগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার না করে ইংরেজীই রেখে দিয়েছেন যার ফলে অনুবাদ কোথাও আড়ষ্ট মনে হয়নি বা ঝুলেও যায়নি। আমার সবসময়ই মনে হয়েছে যারা মৌলিক লেখালেখি করেন তাদের অনুবাদ অনেক বেশী প্রাণবন্ত হয়। আমার প্রিয় অনুবাদকদের সবারই নিজের উল্লেখযোগ্য মৌলিক লেখা রয়েছে।
ফুয়াদ আল ফিদাহ, আবদুল্লাহ ইবন মাহমুদ, জি এইচ হাবীব, কেপি ইমন প্রমুখদের সাথে আরো একটি নাম যুক্ত হলো। খুবই চমৎকার অনুবাদ করেছেন আলভী আহমেদ।
বইয়ের মূল চরিত্র তরু ওয়াতানাবের জবানিতেই আমরা তার গল্প শুনি। পুরো বইটিই উত্তম পুরুষে বর্ণিত হওয়ায় মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল ডায়েরী পড়ছি। বইয়ের প্রেক্ষাপট হচ্ছে সত্তরের দশকে এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণের জীবন। বইয়ের বাকি মূল দুই চরিত্র হচ্ছে নাওকো ও মিদোরি; এই দুজনের চরিত্র প্রায় বিপরীত। আমরা গল্পের যত ভেতরে প্রবেশ করি তত গভীরভাবে ওয়াতানাবের টানপোড়নের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি। যারা একটু অন্তর্মুখী তারা খুব ভালোভাবেই ওয়াতানাবের সাথে নিজেকে মেলাতে পারবেন। কৈশোর জীবনে ওয়াতানাবির একমাত্র বন্ধু ছিল কিজুকি, কিজুকির প্রণয়িনী ছিল নাওকো সেই সূত্রেই ওয়াতানাবের সাথে নাওকোর পরিচয় তবে সেই পরিচয়ে কোন ঘনিষ্ঠতা ছিল না। ওয়াতানাবে, কিজুকি ও নাওকোর শহর কোবে তে যা হয়নি তারা দুজনেই টোকিওতে পড়তে যাবার পর তা হলো ওয়াতানাবে ও নাওকোর মধ্যে ঘনিষ্ঠতার সৃষ্টি হলো; হয়তো তার জন্য কিজুকির মৃত্যূই দায়ী। ওয়াতানাবে বা নাওকো কেউই কিজুকির মৃত্যূকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি।
এই দুজনের মধ্যে অনেক মিল ছিল আবার ভালোবাসার কোন কমতিও ছিল না তবু তারা পরস্পরের কাছে আসতে পারেনা। এক অদৃশ্য দেয়াল তাদের মাঝে বাঁধা হয়ে থাকে। কিছু সময়ের জন্য সেই দেয়াল ভেঙ্গে গেলেও আবার তাদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায় না আত্মিক দূরত্ব নয় অবস্থানগত দূরত্ব। নাওকো নিজেকে ওয়াতানাবের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এরই মধ্যে ওয়াতানাবের বন্ধুত্ব হয় নাগাসাওয়ার সাথে যে ছিল আর দশজনের চেয়ে অনেক আলাদা সে ওয়াতানাবের মনোজগতে ভালো প্রভাব ফেলে। নাগাসাওয়ার জন্যই ওয়াতানাবে নিজেকে আরো ভালোভাবে চিনতে পারে ও সে আসলে কী চায় তা কিছু কিছু অনুধাবন করতে থাকে। মিদোরির সাথেও ওয়াতানাবের পরিচয় হয় যে আপাতদৃষ্টিতে নাওকোর একদম বিপরীত। নাওকোর নিস্প্রভ, দ্যূতিহীন উপস্থিতির পাশে মিদোরো যেন এক বর্ণিল আলোকচ্ছ্বটা। তবে সেই উজ্জ্বল খোলসের ভেতরেও অন্য এক মিদোরি ছিল যা শুধু ওয়াতানাবেই স্পর্শ করতে পেরেছে। এক সময় ওয়াতানাবে মিদোরির জন্যও দূর্বল হয়ে পড়ে ভালোবেসে ফেলে তাকে, মিদোরিও অনুভব করে ওয়াতানাবের প্রতি তার পক্ষপাতিত্ব। কিন্তু তাইবলে এটি কিন্তু কোন ত্রিভুজ প্রেমের আখ্যান নয়। নিজের অবস্থান ও নিজের জীবনে নাওকো এবং মিদোরির উপস্থিতি সম্পর্কে ওয়াতানাবে বরাবরই পরিষ্কার ছিল। এভাবেই বইটি এগিয়ে যেতে থাকে। আমরা ওয়াতানাবের দর্শন বুঝতে থাকি, তার ভালোবাসা অনুভব করতে থাকি। ওয়াতানাবের এই টানপোড়নের মধ্যে বইয়ে এক রকম স্থিতি এনে দিয়েছে রেইকো নামের চরিত্রটি। তার জীবনবোধ ও কিছু সংলাপ মনে রাখার মত। বইয়ের মূল উপজীব্য ওয়াতানাবের ভালোবাসা হলেও এটি রোমান্টিক কোন লেখা নয়। পাওয়ার চেয়ে না পাওয়াকেই মুরাকামি বইতে বেশী তুলে ধরেছেন। ওয়াতানাবে, নাওকো, মিদোরির নিঃসঙ্গতা, সবার মধ্যে থাকার পরেও একা মনে হওয়া পাঠককে অব্যশই নাড়া দেবে।
ওয়াতানাবের ভেতরের দ্বন্দ, সংশয় লেখক খুবই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সম্পূর্ণ আলাদা তিনটি প্রধাণ চরিত্রকে মুরাকামি যে একই সূতোয় বেঁধেছেন তা হচ্ছে দ্বিধা। আমরা বইয়ের প্রধাণ তিন চরিত্রকেই চরম দ্বিধাগ্রস্থ হতে দেখি; নাওকো কিজুকির মৃত্যূ কখনোই মেনে নিতে পারেনা আবার যে ওয়াতানাবের কাছেও আসতে চায়, মিদোরি নিজের দায়িত্ব ও উচ্ছ্বলতার মধ্যে একটু ফাঁক খোজে আর ওয়াতানাবে ভঙ্গুর নাওকোর খুটি হতে চাইলেও মিদোরিকে সে ছাড়তে পারেনা। এই যে চরিত্রগুলোর মধ্যের অন্তর্নিহিত সংশয় তার বর্ণনা মুরাকামি খুবই দক্ষতার সাথে করেছেন। যেকোন মানুষ যে জীবনে সুখের সন্ধানে শুধু অবসাদই পেয়েছে সে বইয়ের প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে নিজের কোন সত্ত্বা খুঁজে পাবে।
এত বিষাদময়তার মধ্যেও মুরাকামির সূক্ষ্ম হিউমার ছড়িয়ে রয়েছে পুরো বই জুড়েই। চরিত্রগুলোর সাথে তাদের আশেপাশের পরিবেশও মুরাকামির বর্ণনায় যেন জীবন লাভ করে। প্রাণবন্ত উপস্থাপনার কারণে আমরা ৬০ দশকের জাপানের ডানপন্থী পরিবর্তনের পরিষ্কার চিত্র দেখতে পাই একই সাথে টোকিওর শরৎ ও শীতেরও খুব মোহনীয় বর্ণনা পাওয়া যায়। কখনো ওয়াতানাবে বা কখনো মিদোরির মাধ্যমে মুরাকামির রাজনৈতিক দর্শনের কিছু আভাসও আমরা পাই। তরুণ মুরাকামি নিজেও ওই সময় টোকিওতে ডর্মে থাকতেন। হয়তো উপন্যাসের ওয়াতানাবে তরুণ মুরাকামির অবয়বে আঁকা তবে এ নিয়ে লেখক কিছু বলেননি। ওয়াতানাবে, মিদোরি, নাওকো বা রেইকো সব চরিত্রকেই মুরাকামি এমনভাবে চিত্রিত করেছেন যে বই শেষ হবার অনেক পরেও মাথায় চরিত্রগুলো ঘুরতে থাকে; তাদের বিষন্নতা, না পাওয়া গুলো মন খারাপ করিয়ে সেয় পাঠকেরও। এখানেই মুরাকামির সার্থকতা তিনি তার চরিত্রগুলোকে জীবনদান করতে সক্ষম হয়েছেন, পাঠকের একদম হৃদয়ে পৌছে দিতে পেরেছেন। প্রথম প্রকাশের পর প্রায় ৩৫ বছর পরেও বইটি এখনো সমান জনপ্রিয়, পঞ্চাশেরও বেশী ভাষায় অনূদিত হওয়া বইটি লাখো পাঠকের মন জয় করেছে আর মুরাকামিকে পরিণত করেছে একজন সুপারস্টারে। বিটলসের গানটির পাখি উড়ে যাবার মতই বইটি পড়া একসময় শেষ হয়ে গেলেও এর রেশ রয়ে যাবে অনেকদিন।
আফগানিস্তানে আমি আল্লাহকে দেখেছি pdf
মোল্লা ওমর তালেবান ও আমি pdf – Link :-1 | Link :-2 | Link :-3 | Link :-4
তালেবানের ইতিহাস Pdf download link: click (open) here