বই রিভিউ ও ডাউনলোড

কামসূএ বাংলা PDF download – রতিশাস্ত্র বই pdf

রতিশাস্ত্র Kamsutra Bangla PDF Download – কামসূএ বাংলা PDF book free download –

গুহা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় Guha by Sanjib Chattopadhyay pdf

রতিশাস্ত্র পিডিএফ ডাউনলোড –  রতিশাস্ত্র pdf download

Download the PDF link


আরও পড়ুনঃ 

“তুমি জেনে-শুনে রজনীগন্ধাকে বলো যে গোলাপ
বুঝি না এ তোমার আলাপ না প্রলাপ
কোথাও নদীর স্রোত নেই
অথচ তুমি বললে, ময়ূরপঙ্খী হেসেছে
একটাও ফুল ফুটলো না
অথচ তুমি বললে, বসন্ত এসেছে।”
বইঃ উড়ে যাওয়ার দিন
“যখন তোমার খারাপ লাগবে আকাশের দিকে তাকাবে। তবে সেটা হতে হবে সুনীল আকাশ। মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে মন খারাপ ভালো করার চেষ্টা করবে না। মেঘলা দিনে মন খারাপ হলে বৃষ্টিতে ভিজবে।”
কোনোকিছুর মুগ্ধতায় ডুবে গেলে কি একটা ঘোর তৈরি হয়? বিষণ্ণ কোনো ঘোর? সন্ধ্যের আধো আলো-আঁধারিতে দেখছেন পাখিরা সব নীড়ে ফিরে যাচ্ছে, অথচ আপনি ফিসফিসিয়ে নিজেকে বলছেন, এই ঘোর যেন না কাটুক, এই ঘোর যেন না কাটুক।
‘উড়ে যাওয়ার দিন’ বইটা ঠিক এই অনুভূতিটা দিয়েছিল আমায়। হয়তো এর থেকে একটু বেশিই যেটা গুছিয়ে লেখার মতো উপযুক্ত শব্দ ভান্ডার আমি খুঁজে পাচ্ছি না।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
গুছিয়ে রিভিউ লিখতে শিখা আমার এখনো হয়ে উঠেনি। তাই বইটা পড়ে শুধু যেটা অনুভব করেছি সেই অনুভূতিটাই ব্যক্ত করার চেষ্টা করছি।
মানুষ চাইলেই অতীত থেকে পিছু ছাড়াতে পারে না। খড়কুটোর মতো বর্তমানকে আঁকড়ে ধরতে চাইলেও অতীত এমন একটা অস্পষ্ট আয়না হয়ে দাঁড়ায় যার প্রতিচ্ছবি সামনে এগুতে চাইলে পিছুটান হয়ে বার বার টেনে নিয়ে যাবে স্মৃতির অতল কোনো গহ্বরে। কখনো কালো টিপে সরিষা ফুলের রঙা হলুদ ওড়না পরা মেয়েটি হয়ে টেনে নিয়ে যাবে দিনাজপুর শহরটার অলিগলিতে, কখনো বা কালো মেঘের মতো ভয়ংকর রুপময় মেয়েটি বাস্তবে বেঁচে থাকার তাগাদা দিবে। কখনো কখনো অতীত মনে করিয়ে দেয় তোমার একটা বর্তমান আছে। একই সাথে দু’টো স্বত্বাকে ভালোবাসার এক মনস্তাত্ত্বিক খেলায় মাতিয়ে রেখেছেন লেখক পুরোটা সময়।
কিছু বই আছে এমন, একটা পৃষ্ঠা পড়েই বইটা দু’হাতে ধরে অসীম শূন্য আকাশটার দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় পার করে দেয়া যায়। কিংবা পড়তে পড়তে বুকের উপর আঁকড়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়া যায়। প্রশান্তির একটা ঘুম। শেষ এমন একটা অনুভূতি দিয়েছিল আমায় ‘এলিফ শাফাক’ এর ‘ফরটি রুলস অফ লাভ’ পড়ে। কয়েকবছর পর এই বইটা আবার সেই অনুভূতিটা দিয়েছে। প্রতিটা পৃষ্ঠা পড়েই বিষাদ এক ঘোরে ডুবে গিয়েছি। কিন্তু এই বিষাদ আমায় অন্যরকম তৃপ্তি দিয়েছে। এমনও হয়েছে চারপাশে সন্ধ্যার আঁধার নেমেছে, পাশের মসজিদ থেকে মাগরিবের আযান ভেসে আসছে, মাথার উপর কয়েকটা নাম না জানা পাখি উড়ে যাচ্ছে , আমি বইটা জড়িয়ে ধরে আধো অন্ধকারে বসে আছি। মনে হচ্ছিল বইটা শেষ না হোক, এই বিষাদ কিংবা ঘোরে আমি অনন্তকাল ডুবে থাকি, ডুবে থাকি। বুকের ভেতর এই পাওয়া না পাওয়ার ব্যথাটা বাজতেই থাকুক।
প্রথম বইটার পাতা উল্টিয়ে ভূমিকাটা পড়েই কিছুক্ষণ লেগেছে আমার মুগ্ধতার রেশ কাটাতে। কোনো বইয়ের ভূমিকা এতটা মুগ্ধ করতে পারে এই ভূমিকা না পড়লে বুঝা যেত না। ১৯৬ পৃষ্ঠার প্রতিটা পৃষ্ঠার বর্ণনাভঙ্গিতে পাঠককে অদ্ভুত বিষাদে গেঁথে রাখার মতো প্রতিভা প্রকাশ করেছেন লেখক। কোনোভাবেই বলার উপায় নেই এটা লেখকের প্রথম বই! লেখকের প্রতি অজস্র শুভকামনা রইলো। এভাবেই লেখার জাদুর গভীরতায় পাঠকদের ডুবিয়ে রাখুক আরো অসংখ্যবার।
আমার চেনা গন্ডির মধ্যে অনেক ভালো মনস্তাত্ত্বিক লেখক হিসেবে সবসময় প্রিয়র তালিকায় ছিলেন এতদিন ‘শিহানুল ইসলাম’। এবার আরেকজন লেখকের নাম যুক্ত হলো।
বইটার প্রচ্ছদের জন্য স্পেশাল একটা ধন্যবাদ দিব আমি প্রচ্ছদশিল্পীকে এত চমৎকার একটা প্রচ্ছদের জন্য। এছাড়া সবসময়ের মতো ভূমি প্রকাশের বইয়ের বাঁধাই, বিশেষ করে বানানের প্রতি এত যত্নশীল ছিলেন চোখেই পড়েনি কোনো ভুল!
পুরো বই জুড়ে অনেক অনেক প্রিয় উক্তি থাকলেও নিচে আমার খুব পছন্দের কয়েকটা দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র।
“প্রতিটা মানুষকে নিয়ে সমাজে প্রচলিত একটা মিথ থাকে—যা কখনো সত্যি হয় না।”
“বয়স্ক মানুষরা ঐশ্বরিক ক্ষমতায় বেঁচে থাকে আর যুবকরা যৌবনের দীপ্তিতে।”
“কিছু কিছু বিষয় আছে যা মানুষকে অলীক মোহগ্রস্ততায় ফেলে দু-এক সেকেন্ডেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।”
“কোনো সমাধান নেই হাসিব। তুমি তো ওকে ছাড়তে পারবে না। বলা যায় কষ্ট পাবার দুর্ভাগ্য নিয়ে তোমার জন্ম। এটা কেউ খণ্ডন করতে পারবে না। তোমার মৃত্যু অনিবার্য, আমি শুধু তোমার মৃত্যুকে সৌন্দর্যমন্ডিত করার পরামর্শ দিতে পারি।”
“প্ল্যাটফর্মে হাঁটতে থাকলাম। আমার ঠান্ডার পরিবর্তে গরম লাগতে শুরু করলো। চাঁদ থেকে অনবরত রূপালী আলো ঝরছে। একটা রাত যেন হাতের মুঠে নিয়েছি আমি। মেয়ে মানুষের মুখমন্ডলের মতো রাতটা। তার চোখ আছে, কান আছে, নাক আছে, ঠোঁট আছে আর বিন্তির মতো আছে বব কাট চুল।
দিনাজপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে আমি পরম তৃপ্তিতে রাতটাকে জড়িয়ে ধরলাম।”
“আমার ক্ষেত্রে প্রেমটা বর্তমানে—কুকুরছানাটা অন্য কারো রুটির প্রলোভনে ঘেউ ঘেউ করছে এরকম।”
“সন্ধ্যায় শুয়ে থাকলে নাকি অসুখ হয়, কিন্তু আমি শুয়ে থাকলাম। যেন অনেক আগে থেকেই অসুস্থ। সন্ধ্যার কালো চাদর আমার শরীরের উপর অসুস্থতার কারণে টেনে দেয়া হলো।”
“আমাদের উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন কিছু যা আমরা জানি না। ভেতরের অসংখ্য বুদবুদ শুধু নিজেদের সুখী করার জন্য টগবগিয়ে ফুটছে। কোনো অনুষঙ্গের প্রয়োজন নেই, যেমন একটা পাখির জন্য কোনো প্রয়োজন নেই একটা নৌকার।”
“একটা চায়ের পেয়ালা হাতে ধরে বসে আছি। যেন অনন্তকাল সময় ধরে এমনটা বসে আছি। মাঝেমধ্যে উচ্ছ্বসিত হই, ব্যথা পাই, আনন্দে দুলি…
কিন্তু এই সবটার শেষটাই হলো একাকী চায়ের পেয়ালা হাতে ধরে বসে থাকা। চুমুক দিই আর না দিই, চায়ের পেয়ালা একসময় উষ্ণতা হারাবেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button