ভাব সম্প্রসারণ PDF Download

আমার প্রিয় শিক্ষক অনুচ্ছেদ

প্রাণের_জি_এম_হাট_রচনা_প্রতিযোগিতা_2021

————————-আমার প্রিয় শিক্ষক——————-
” সৃষ্টিশীল প্রকাশ এবং
জ্ঞানের মধ্যে আনন্দ
জাগ্রত করা হলো
শিক্ষকের সর্বপ্রধান শিল্প “

———–ভূমিকা:———
কালের যাত্রার ধ্বনি অনুরণিত হয়ে ওঠে শিক্ষকের কণ্ঠে। জ্ঞানের রাজ্যে আমার পদচারণার শুভ উদ্বোধন ঘটেছে শিক্ষকের পুণ্য করম্পর্শে অবাধ বিচরণ চলছে তাদের ক্রমাগত দিক নির্দেশনায়। জীবন সুগঠনের মন্ত্র পেয়েছি তাঁদের বাণী থেকে। তারা সংখ্যায় অনেক কিন্তু স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল। তাঁরা বৈচিত্র্যে ভিন্নতর, কিন্তু আকর্ষণে অনন্য। তবু তাঁদের আলাের মিছিল থেকে একজনকে আমি প্রিয় বলে পৃথক করতে পারি। আমার প্রিয় শিক্ষকের নীতি-নির্দেশনা, চিন্তা-চেতনা-আদর্শ আমার জীবনে চলার । পথের পাথেয় হিসেবে বিবেচিত। তার জীবনবােধ ও প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করেই আমি আজ আলাের পথের যাত্রী । তার মহান সান্নিধ্য লাভ করতে পেরে সত্যিই আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।

———আমার প্রিয় শিক্ষক——–
আমার এই চলমান শিক্ষাজীবেন আমি অনেক শিক্ষকের সংস্পর্শে এসেছি। তাদের সকলের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ।
যদিও আমার শিক্ষাজীবন শেষ হয়নি তাই বলা যায় অনেক শিক্ষক এর শিক্ষা নেওয়া আমার এখনো বাকি রয়েছে।
আমার এই ছোট ছাত্রজীবনে আমার অনেক শিক্ষক রয়েছে।
তাদের সবার মধ্যে আমার প্রিয় শিক্ষক হচ্ছে ” রায়হান ভূঁইয়া রাসেল ( স্যার ) ” আমাদের কাছে রায়হান স্যার নামে পরিচিত।
স্যার এর জন্ম আমাদের এই প্রাণের জি এম হাট এর নুরপুর গ্রামে ( বড় বাড়ি)
তিনি ইংরেজি ও হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক।

———–প্রথম সাক্ষাত ——–
আমার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় ” জি এম হাট আইডিয়াল একাডেমি “। আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত তখন (2012)স্যার আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন।
ঐ দিন স্যার একটা লাল পাঞ্জাবি পরনে ছিল। স্যার ঐ দিন যখন আমাকে দেখে তখন আমাকে আমার নাম জিজ্ঞাসা করে। আমিও একটু ভয় পেয়ে নাম বলি নাই। তখন স্যার ভয় পেয়ো না বলে আমাকে আদর করে আবার নাম জিজ্ঞাসা করলেন। তখন আমি আমার নাম বললাম।তারপর আমার বাবার নাম জিজ্ঞাসা করলো। বাবার নাম বলার পর আমাকে চিনতে পারলো আমাকে তখন স্যার বললো চলো ক্লাসে যাই তখন আমি স্যারের সাথে আনন্দে ক্লাসে যাই। কিছুক্ষণ এর মধ্যে আমার সকল ভয় কেটে যায়।

———কেন প্রিয় শিক্ষক———
আমি ইংরেজিতে এতো ভালো ছাত্র ছিলাম নাহ্। আমার এ ব্যাপারে আমার আব্বু এ ব্যাপারে চিন্তিত ছিলেন। তখন আমার ইংরেজি শিক্ষক ( রায়হান স্যার) এর সাথে আব্বু কথা বলে আব্বু বলেছিল পড়া না পারলে কোন শাস্তি যাতে মাফ না যায়।কিন্তু আমার স্যার তা করেন নি স্যার নিজের মতো করে আমার ভুল ত্রুটি ধরে আমাকে এগুলি বিরতির সময় শিখাতেন। এছাড়া আমার হাতের লেখা যদি আজ সুন্দর হয়ে থাকে তো তা আমার রায়হান এর স্যার এর শিক্ষাকে। স্যার আমাকে প্রতিদিন একপৃষ্ঠা করে হাতের লেখা লিখতে বলতেন। বিশেষ করে আমাকে স্যার বলতেন ” আমি ক্রিকেট ভালোবাসি ” এই লেখাটা হাতের লেখা হিসাবে বেশি দিতেন। কারণ স্যার জানতো ক্রিকেট আমার পছন্দ খেলা। আর স্যার এর ঐ হাতের লেখা আমার টেবিলে, স্কুলের দেওয়ালে , আমার ফেসবুক এর বায়ো পর্যন্ত লেখা।
স্যার যেন আমার মনের কথা যানতেন। আমি কী করতে চাইতাম তা বুঝতেন। ততক্ষণাৎ আমাকে ঐ কথা টা বলতেন যেটা আমি মনে মনে ভাবতাম বা যেটা আমি বলতে চাইতাম।
তখন স্যারকে আমার যাদুকর মনে হতো।

স্যারের ছাত্রদের সাথে মিশে ছাত্রদের শিক্ষা ও বিনোদন এসবের কারণে স্যারকে প্রিয় শিক্ষক মানতাম।
কিন্তু প্রিয় শিক্ষকের যে বেশি দিন আমাকে শিক্ষা দিতে পারলো না। ২০১২ সালে শিক্ষকতা করতে এসে ২০১৪ এর শেষে স্যার আমাদের স্কুল থেকে বিদায় নেন।
ঐ দিন আমার সবচেয়ে খারাপ লেখেছে।
আমি মনে মনে আল্লাহ্ র কাছে প্রার্থনা করেছিলাম স্যার যেন আবার ফিরে আসে।
যদিও সেটা আর হয়নি।
২০১৫ সালে সমাপনী পরীক্ষা শেষ হয়।
২০১৬ সাল ১ লা জানুয়ারি আমি জি এম উচ্চ বিদ্যালয় এ ভর্তি হতে গিয়ে স্যারের সাথে দেখা। স্যারকে সালাম করে জিজ্ঞাসা করলাম স্যার আপনি এখানে , স্যার তখন জবাবে বললো আমি এই স্কুলে ২০১৫ সালে শিক্ষকতায় যোগ দিয়।
আসলে সত্যি বলতে কী আমি ঐ সময় কিন্তু অনেক খুশি হই।সেই পুরনো স্যারকে পেয়ে।
তবে ভাগ্য এবারও সহায় হয়নি। আমি স্কুলে দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় স্যার স্কুল থেকে বিদায় নেন।
যদিও স্যারের কাছে আমি এখনো প্রাইভেট পড়ি।
আলহামদুলিল্লাহ স্যারের সাথে আমার প্রথম দেখার কারণে এবং এখনো স্যারের কাছে আমি শিক্ষা নিতে পেরে।

———————একটি স্মরণীয় ঘটনা ———————–
সময়টি ২১শে ফেব্রুয়ারির দিন ২০২০। বিদ্যালয়ে ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন ছিল।
যেখানে একটি আমার দল ছিল। আমি অনেকটা নার্ভাস ছিলাম তখন আমাকে সাহস দে স্যার। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করছিলাম ৩ বলে ৬ রান লাগে ম্যাচ জিততে। প্রথম বল ডট যায় তখন আমি ব্যাট পরিবর্তন করতে উপরে আসি তখন স্যার আমারে বলে এটা কোনো ব্যাপার না তুই পারবি বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। তখন মাঠে গিয়ে ছক্কা। ম্যাচটা জিতছি।
এখানে অনেক হয়তো ভাবছেন স্মরণীয় ঘটনা কী ?
জি এম হাট উচ্চ বিদ্যালয় এ শেষ কবে এমন ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন হয়েছে আমি জানি না। আর আমি কোনো দিন স্কুলের হয়ে ক্যাপ্টেন এর দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ জয়ী হয়নি। প্রিয় স্যারের দেওয়া উৎসাহ আর নিজের আত্মবিশ্বাস এর কারণে জয়ী ম্যাচের এর কারণে আমার প্রিয় শিক্ষকের সাথে আমার স্মরণীয় দিন।
যা আমার হৃদয় এ গাঁথা থাকবে।
উপসংহার: আমার প্রিয় শিক্ষক এর জন্য গর্ববোধ করি। রচনার নিয়মানুযায়ী উপসংহার দ্বারা শেষ করতে হচ্ছে। প্রিয় শিক্ষক নিয়ে যতই লিখি শেষ হবে না।
আমার প্রিয় শিক্ষক এর জন্য দোয়া ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
__________( সংক্ষিপ্ত)_________________

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button