বাংলা রচনা বই PDF কালেকশন - Bangla Rochona for class 5, 6,7,8,9,10
একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনা (পয়েন্ট আকারে ৮০০ শব্দ) for All Class
২০০-৩০০, ৫০০, ৮০০, ১০০০ শব্দ পয়েন্ট আকারে একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনা pdf আকারে সম্পূর্ন এখানে পাবেন। আশাকরি, ৫ম, ৬ষ্ঠ, তম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণি ও JSC, SSC, HSC রচনা প্রতিযোগিতায় ভাল ফলাফল পেতে ও বিজয় পেতে এই একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা Bangla Rochona পিডিএফ ডাউনলোড করার মাধ্যমে এই পোস্ট আপনাকে হেল্প করবে।
Contents
একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনা বিস্তারিত
একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
আমি এক রিক্সাওয়ালা। কিন্তু রিকসাওয়ালা হয়ে আমি জন্ম গ্রহণ করিনি। পৃথিবীর অন্য শিশুদের মত আমিও চির চঞ্চল শিশু হয়েই জন্মগ্রহণ করেছিলাম। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ না করলেও এক মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম হয়। ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের নির্মম পেষণ আমাকে শৈশবে সইতে হয়নি। পাড়ার অন্য শিশুদের মত আমিও খেলাধুলা ও আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠছিলাম। স্কুলের পড়াও পড়েছি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। স্কুলের শিক্ষকগণ ভালো খেলোয়াড় হিসাবে আমাকে স্নেহ করতেন। আমার মা বলতেন, “বড় হলে আমার ছেলে ম্যারাডোনা হবে।” কিন্তু আমার ভাগ্য আমাকে প্রতারিত করল।মায়ের সগর্ব আশীর্বাদ মিথ্যা প্রমাণিত করে ভাগ্য আমাকে নিয়ে এল ঢাকার রাস্তায়। আমি হলাম রিক্সাওয়ালা। এই দেখ, আমার নামটাই এখনও বলা হয়নি। আমার নাম বকুল। মা-বাবা শখ করে আমার নাম রেখেছিলেন ফুলের নামে নাম। ফুল প্রস্ফুটিত হয়ে যেমন সুবাস ছড়ায় তেমনি আমি বড় হয়ে সুনাম ছড়াব— সকলের কাছে পরিচিত হব ভালো মানুষরূপে সে প্রত্যাশা ছিল তাদের। কিন্তু কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যের উদ্দামতা আমাকে স্পর্শ করতেই আমার জীবনে নেমে এল অমানিশার অন্ধকার। রাক্ষুসী পদ্মার তীব্র ভাঙনে ভেঙে নিল আমার গ্রাম-বাড়িঘর-জোতজমি সব। মানিকগঞ্জ জেলার পশ্চিমাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়ন বিলীন হলো করাগ্রাসী পদ্মার উত্তাল তরঙ্গে। সারিদ্র্যের শৃঙ্খল পড়ল আমাদের চলমান জীবনের পায়ে।আমার জীবন মোড় নিল অন্য খাতে। মুছে গেল জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন। খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম আমি। মা-বাবা আর ভাই বোন কে কোথায় আছে তাও আজ আমার জানা নেই। আমার দশ বছরের ছোট বোনটিকে আমি ঢাকায় আসার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম ওর পেটের ভাত জুটিয়ে খাওয়ার জন্য এক সাহেবের বাসায় কাজে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে গত বছর আত্মহত্যা করে জীবনের দুঃখ নিবারণ করেছে। শুনেছি মা-বাবা আর কেউ বেঁচে নেই। বেঁচে আছে শুধু সহস্র বঞ্চনার বিষাদিত স্মৃতি। মাত্র চার টাকা পঞ্চাশ পয়সা পকেটে করে দুই ভাই-বোন রওয়ানা দিয়েছিলাম ঢাকার পথে বাসের ভাড়া দিতে না পারায় আমাদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছিল বাসের হেলপার। ওর কথাগুলি আজও আমার মনে পড়ে- “দেখতে তো সম্রাট শাহজাহানের মত চেহারা: বাসের ভাড়া চাইলেই গরিব হয়ে যাও।” তারপর একটা ট্রাকে চড়ে আমরা ঢাকায় এসে মিরপুর মাজারে রাত কাটাই। রাতে মাজারের খিচুড়ি খেয়ে সারাদিনের ক্ষুধার আগুন চাপা দেই।পরের দিন এক রিক্সা মালিকের সাথে কথা বলে বোনটিকে এক বাসায় কাজে দিয়ে আমি রিক্সা চালাবার পথ খুঁজে নেই। আর তখন থেকে আমি হলাম রিকসাওয়ালা।প্রতিদিন ৪০ টাকা মালিককে রিকসার ভাড়া দিয়ে সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি রিকসা চালাই। কোনদিন ৫০ কিংবা ৬০ টাকা থাকে। কোন রকমে চলে যায় দিন। প্রতিদিন আমি বিচিত্র মানুষের সাথে কথা বলি। দেখা হয় ভালো-মন্দ কত নুষের সাথে। কতজন এক জায়গার কথা বলে ভাড়া ঠিক করে উঠে, তারপর নিয়ে যায় সে স্থান হতে অনেক দূরে। তখন মৃদু প্রতিবাদ কিংবা দু-এক টাকা বেশি ভাড়া চাইলেই ভাগ্যে জুটে নিতান্ত পক্ষে বকা কিংবা চড়-থাপর রিক্সাওয়ালা শব্দটা ওদের কাছে একটা বকা। অতি ঘৃণার সাথে আমাদের ভদ্র মানুষেরা ছুঁড়ে দেয় এ বকাগুলি।কখনো কখনো আমারও ইচ্ছে হয় তথাকথিত ভদ্র মানুষের ঐ আচরণের প্রতিবাদ করি। কিন্তু তখনই আমার মনের পর্দায় ভেসে উঠে আমার অস্তিত্বের ছবি- আমি যে রিক্সাওয়ালা রিক্সাওয়ালা হিসাবে আমার নিজের প্রতি কখনো কখনো ভারি অহঙ্কার জন্যে। ঐ যে ছোট বেলায় বইয়ের পাতায় পড়েছিলাম “কথনো পরধন হরণ করিও না।” “সদা সত্য কথা বলবে।” আমার মিথ্যা কথা বলার কোন প্রয়োজন হয় না। কেউ আমাকে দশ টাকা ঘুষ দেয় না। সুতরাং ওই পোশাকধারী ভালো মানুষগুলির চেয়ে আমি যখন নিজেকে সৎ ভাবি, তখন সত্যি নিজের প্রতি একটা নীরব অহঙ্কার জন্যে।সারাদিন রিক্সা চালাবার পর রাতে ঘরে ফিরি। আমার চার বছরের ছোট্ট ছেলে ঘুমিয়ে থাকে। ঘুমন্ত সন্তানকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে আমি ভুলে যাই ‘আমি রিক্সাওয়ালা’।সকালের সূর্য আমার হাতে মুছে দেয় রিক্সার হ্যান্ডেল, আর সন্ধ্যার সিদ্ধ জ্যোৎসা আমার প্রাণে বুলিয়ে দেয় একরাশ সান্ত্বনা। ঢাকা শহরের বড় বড় দালান-কোঠা দেখে কখনো কখনো আমার মনেও স্বপ্ন জাগে বড় হওয়ার। মুহূর্তেই বস্তির জীবন আর রিক্সার মালিকের বীভৎস আচরণের কথা মনের সব স্বপ্নের আলো ঢেকে ফেলে মেঘে ঢাকা সূর্যের মত। পরক্ষণেই নতুন সকালের প্রত্যাশায় চোখে ঘুমের আবেশ জড়িয়ে হারিয়ে যাই অন্যলোকে।মাঝে মাঝে এ বিশাল শহরের অলি-গলিতে ঘুরে বেড়াবার আনন্দ আমার ক্লাক্তি ভুলিয়ে দেয়। যাদুঘর, ইউনিভার্সিটি, পিজি হাসপাতাল, রেডিও স্টেশন, টিভি ভবন, পুরান ঢাকা, মতিঝিল, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম আমার প্রতিদিন ঘুরে বেড়াতে হয়। আমার রিকসাটির নাম ‘পঙ্খীরাজ’। প্রতিদিন পঙ্খীরাজ আমাকে দেখায় নতুন প্ন, আর হাতে তুলে দেয় পঞ্চাশ-ষাট টাকা। পঙ্গীরাজের চাকার সাথে আমার জীবনের চাকা ঘুরে প্রতিদিন নতুন পথে, নতুন প্রত্যাশায়।আমি ভাবি একজন রিক্সাওয়ালার জীবনে এত প্রত্যাশা থাকা কী ভালো? তবু আমার অতীত আমাকে টেনে নিয়ে যায় নতুন ভবিষ্যতের কাছে। আমি জানি এ সমাজের ভিত ভেঙ্গে রিক্সাওয়ালার জীবনে এর চেয়ে সমৃদ্ধি আসা সম্ভব নয়— তবু ভাঙা বুকে নতুন আশা জাগে। মাঝে মাঝে যখন শুনি ঢাকা ম্যাগাসিটি হবে, রিক্সা তুলে দেওয়া হবে। তখন বস্তির সহস্র কণ্ঠের কলরবের ভিড়ে হারিয়ে যায় আমার নতুন স্বপ্ন। নির্মম বাস্তবতা এসে বলে, “তুই এক রিক্সাওয়ালা”। তখন আমিও হারিয়ে যাই রাস্তার অগণিত রিক্সা মিছিলের ভিড়ে।আমার জন্মকথা শেষ হতে চলেছে। জন্মের পর থেকে আমি চলেছি তো চলেছি। কিন্তু একদিন আমারও মৃত্যু হলো। সে মৃত্যু কী ভয়াবহ। আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হলো। যন্ত্রণায় আমি ছটফট করলাম। জীবনের তরে আমি নিঃশেষ হয়ে গেলাম।একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা pdf download করুন
- বাংলা প্রবন্ধ রচনা/অনুচ্ছেদের নামঃ একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা,
- ফাইল ফরম্যাটঃ pdf download(পিডিএফ ডাঊনলোড),
- ক্যাটাগরিঃ Bangla Rochona pdf(Rachona),
- ধরুন- পয়েন্ট আকারে রচনা,
- Total word: 200, 300, 400, 500, 800, 1000, 1500 শব্দ,
- ক্লাসঃ class 6, 7, 8 ,9 10, 11, 12,
- Psc(প্রাইমারি স্কুল), JSC(হাই স্কুল), SSC(এস এস সি), HSC(এইচ এস সি), fazil(ফাজিল), kamil(কামিল) hons, degree
FAQ About একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা
Question1: রচনাটির কেমন?
Answer1: একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনাটি পড়লে SSC,HSC ছাত্র যেকারো অনেক জ্ঞান বাড়বে।
Question2: একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা এর পিডিএফ কি এখানে পাওয়া যাবে?
Answer2: জি, একজন রিক্সাওয়ালার আত্মকথা রচনাটি PDF সহ সম্পুর্ন এখানে পাবেন।