বাংলা রচনা বই PDF কালেকশন - Bangla Rochona for class 5, 6,7,8,9,10

একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনা (পয়েন্ট আকারে ৮০০ শব্দ) for All Class

২০০-৩০০, ৫০০, ৮০০, ১০০০ শব্দ পয়েন্ট আকারে একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনা pdf আকারে সম্পূর্ন এখানে পাবেন। আশাকরি, ৫ম, ৬ষ্ঠ, তম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণি ও JSC, SSC, HSC রচনা প্রতিযোগিতায় ভাল ফলাফল পেতে ও বিজয় পেতে এই একটি বটগাছের আত্মকাহিনী Bangla Rochona পিডিএফ ডাউনলোড করার মাধ্যমে এই পোস্ট আপনাকে হেল্প করবে।

Contents

একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনা বিস্তারিত

একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

আমি একটি বটগাছ। শতশাখা বাহু মেলে কবেকার কোন প্রাচীন কাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। বয়সের হিসাব আমার নেই। তবে মানুষের যেমন বয়সের বলিরেখা জমে উঠে তার কপালে, আমারও তেমনি বলিরেখা জমে। সে বলিরেখা বাইরে থেকে কেউ দেখতে পারে না, তা জমে আমার অভ্যন্তরে। আমার দেহে। আমাকে কেটে নিষ্প্রাণ কাঠে পরিণত করে সেই বলিরেখা গুণে কাঠ হিসাবে গুণাগুণ বিচার করা হয়। আজ তারি আয়োজন চলছে। খুব সকালে আমার পত্রালির আড়ালে গড়ে উঠা পাখপাখালির শহর জেগে উঠবার আগেই আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। বুকের মধ্যে যেন হাজার হাতুড়ির ঘর পড়ছে। ভীত চোখ মেলে চেয়ে দেখলাম দশ বার জন শ্রমিক আমার চারপাশে। তাদের হাতে মোটা কাছি, দড়িদড়া কুঠার, দা-বুক ভেঙ্গে একটা দীর্ঘনিশ্বাস বের হল। গত দু’দিন আগে আমার মাথার উপর দিয়ে ভীষণ এক কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। সেই ঝড় আমার ছড়িয়ে পড়া শাখা থেকে একটি শক্ত সবল মোটা শাখা ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। এ যেন আমার একটি প্রধান বাহু ভেঙ্গে ফেলা। যন্ত্রণা যা পেয়েছি তার শেষ নেই। তবে মনে মনে দুঃখ পেয়েছি আরো বেশি। কারণ, যে শাখাটি আমার ভেঙে গেছে সেটির ছায়ায় যে রোজ এসে বসে কত প্রাণোচ্ছল চঞ্চল তরুণ ছেলেমেয়ে। ঝলমল করে হাসে, হৈ হৈ করে কথা বলে, আনন্দ করে খায় বাদাম, চানাচুর আরো কত কী। কখনো কখনো কোন মেধাবী ছাত্র এই ছায়ায়, ঘাসের উপর বইপত্র খুলে বসে পড়ে, কেউ পত্র পত্রিকা হাতে শুয়েও পড়ে। কত বক্তৃতা, আলোচনা, দরবার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও তো আমার এই বিরাট শাখাটির ছায়ায় এতকাল সম্পন্ন হয়েছে। আজ সেই জায়গাটি লাগছে ফাঁকা ধু ধু।  হ্যাঁ, আমি দাঁড়িয়ে আছি একটি শিক্ষাঙ্গনের মাঠের একপাশে। আমার অন্যান্য ডালপালার ছায়া গিয়ে পড়ে যেদিকে, সেদিকে জমজমাট রাজপথ। গাদাগাদি করা দোকান পাট। দিনরাত গাড়ি ঘোড়া আর লোকজনের ভীড় চলে সেখান দিয়ে। ধুলাবালিতে আমার সমস্ত শরীর থাকে আচ্ছন্ন হয়ে। মানুষের চলাচল এবং দোকান পাটের অসুবিধা হয় বলে আমার ঝুরিগুলো কেটে ফেলা হয়। দু’এক গাছি যা থাকে বস্তির দুষ্টু ছেলেরা তা ধরে টানাটানি করে, ঝুলনা ঝুলে দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দেয়। আমার এদিকটার অবস্থা দেখে চোখ ফেটে পানি আসে। জট ছিঁড়ে নেয়া অভিশপ্ত সন্ন্যাসীর মতো আমার এ দশা দেখতে পারি না। এর মধ্যে আমার যত শান্তি ছিল এই শিক্ষালয়ের আঙিনাটুকুতেই। ঝড়ে তাই শেষ হল। আজ আমার শত বছরের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ জীবনই শেষ হতে চলল। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- আর নয়, এই বুড়ো বটকে এবার কাটো।  মৃত্যুর কথা জেনে ফেললে মানুষের স্মৃতিতেও বুঝি আমারই মতো হুড়মুড় করে আসে অতীত দিনের কত কথা। একটু আগে যে জীবন মনে হয়েছিল শত বর্ষের, দীর্ঘকালের, এখন মনে হচ্ছে- এইতো সেদিনের কথা যেদিন আমি কচি কচি এ গুচ্ছ কিশলয় নিয়ে এখানে প্রথম মাথা তুলে দাঁড়ালাম। চারদিকে তাকিয়ে দেখি আশে পাশে অনেক গাছ। বড় ছোট মিলিয়ে ঝোপ, খড়, শন আর পাটখড়ির বেড়া। আমার সমবয়সী একটি লিকলিকে টলমল পাতাওয়ালা গাছ আমায় খুব তাচ্ছিল্য করে বলল, এই খুব যে মাথা উঠিয়ে এদিকে ওদিকে দেখছিস, তোর নাম কি রে? আমি চুপ হয়ে গেলাম। তাইতো, কি আমার নাম? কীই বা পরিচয়? অপরাধীর মত ঘাড় নামিয়ে মাটির দিকে তাকাই। কী সুন্দর আমার দেহ। কচি চিক্কন। কিন্তু মনে হয় অসীম শক্তি আর প্রাণ প্রাচুর্য প্রতি রোমকূপে, আমার জ্বলজ্বলে সবুজ ছালের তলায় সঞ্চিত হয়ে আছে। বুকে বল এলো। ভাবলাম পরিচয় অবশ্যই আছে, আর তা অবশ্যই জানব।  বেশিদিন অপেক্ষা করতে হল না। কদিন পরেই ঐ জঙ্গলে একদল ছেলেমেয়ে এলো টুকটুকে মুখ। সারাদিন নিজেরাই রান্নাবান্না করল। হৈ হৈ করে খাওয়া দাওয়া সারল। তারই মধ্যে একটি ফুলের মতো চেহারার মেয়ে তার সঙ্গীর সাথে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ আমাকে দেখে থমকে দাঁড়ালো। বিস্মিত গলায় বলে উঠলো, দেখো দেখো বটের চারা। কি কচি আর সুন্দর। মনেই হয় না এইটুকু শিশুর মধ্যে বিশাল এক মহীরূপের সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে।  ওদের কাছে থেকেই সেদিন জানলাম আমার অমিত শক্তির কথা, জনলাম কপোতাক্ষের তীরে শিবমন্দিরে আঙিনায় সেই বটবৃক্ষের কথা, মাইকেল যাকে নিয়ে লিখেছেন কবিতা। জানলাম নিরঞ্জনা নদীর তীরের সেই বিশাল বৃক্ষের কথা যার তলায় ধ্যান করে সত্যের সন্ধান পেয়েছেন অমিতাভ বুদ্ধ। আমি নিজেকে সেই বোধিদ্রুমের বংশধর বলে ভাবতে লাগলাম। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসে আমার দেহ লক লক করে বেড়ে উঠল। ক’বছরের মধ্যেই ছাতার মত শাখা ছড়িয়ে গোটা অঞ্চল আমি দখল করে ফেললাম। আমিই হয়ে উঠলাম রাজা। ধীরে ধীরে আমার চারপাশের জঙ্গল কমে আসতে লাগলো। একটি দুটি করে দোকান পাট বসল। একদিন দেখলাম আমাকে ঘিরে জমে উঠেছে এক জমজমাট মেলা। পৌষ সংক্রান্তির মেলা। কত হাজারো জিনিসপত্র আর কত রকম মানুষে থৈ থৈ করে উঠলো আমার চারপাশ। আমার বিশাল দেহ আর আকাশ ছোয়া শীর্ষ দেখে প্রবীণ হিন্দু পুরুষরা জানালো প্রণাম, মহিলারা আমার গায়ে দিল সিঁদুরের ফোঁটা, জোড় হাতে কত রকম প্রার্থনা জানালো। এলাকার লোকজন এ মেলার নাম দিল আমার নামে- বটতলার মেলা। তখন আমার গর্ব তুঙ্গে। অহংকারে বিজয় গর্বে আমি আত্মহারা হয়ে উঠলাম। সকলকেই মনে হতে লাগলো কী ছোট, কী অক্ষম, কী শক্তি হীন। কিন্তু, এক মর্মান্তিক ঘটনায় আমার এ গর্ব চূর্ণ হল।  আমার পাশের সেই কলাগাছ ঘেরা ছোট্ট গামটিতে এক মুচি বউ থাকতো। সরস্বতী তার নাম। ঠিক দেবী প্রতিমার মত মুখ। নিঃসন্তান সেই নারীর শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতনের শেষ ছিল না। পৌষ সংক্রান্তির মেলায় এসে গলায় আঁচল দিয়ে আমাকে প্রণাম করে দু’চোখ বুজে ফিসফিসিয়ে বলত, ভগবান দয়া কর।  একদিন সরস্বতীর স্বামীকে সাপে কাটল। সকলে দোষ দিল সরস্বতীকে। নিঃসন্তান সরস্বতীর স্পর্শ অভিশপ্ত। অমানুষিক নির্যাতন করল। সেই রাতে হঠাৎ বুকচাপা কান্নার আওয়াজ কানে আসতেই দেখি আমার ছায়ায় দাঁড়িয়েছে সরস্বতী, হাতে তার গরু বাঁধা দড়ি। নিমেষে বুঝে ফেললাম কী ঘটতে যাচ্ছে। শত শাখা দুলিয়ে আমি তীব্র ভাবে “না – না” করে উঠলাম। কিন্তু সরস্বতী প্রণাম সেরে সেই শাখাটি আমার ঝড়ে ভেঙ্গেছে তাতে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলল। আমি অসহায় চোখে তার মর্মান্তিক মৃত্যু দেখলাম। অথচ কিছুই করতে পারলাম না। সে দিন বুঝলাম কেবল দেহেই আমি বড়। আসলে আমি বড় শক্তিহীন, বড় দুর্বল।  এরপর গত হয়েছে কত শত দিন। দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে চারদিক। সেই আজ গ্রাম, সেই হাট, সেই মেলা সব মুছে গেছে। গ্রাম ভেঙে গড়ে উঠেছে শহর। বড় বড় বাড়ি, স্কুল, কলেজ, দোকান পাট, অফিস আদালত, চওড়া রাস্তা, নানা রকম গাড়ি, বিজলি বাতি, নানা রকম সাজ-সজ্জায় আমার চারদিকে ঝলমল করে উঠেছে শহর।  একদিন দেখলাম এলাকার দোকান পাট সব ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে বিরাট চার তলা দালান উঠল, প্রথমে এটি হল স্কুল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসতো। হল্লা করতো। শৃঙ্খলার সাথে লেখা পড়া করতো। আমার খুব ভালো লাগতো। ধীরে ধীরে এটি কলেজ হল। আরও বড় সীমানা নিয়ে চারদিকে দেয়াল দেয়া হল। আমি পড়লাম সেই দেয়াল ঘেঁসে কলেজের ভিতরে। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। বৃদ্ধ বয়সে বড় ভাল লাগতো উজ্জ্বল প্রাণবন্ত সব ছেলেমেয়েদের। ছুটির পরে সারা কলেজ যখন শান্ত হয়ে পড়ত, তখন আমি এক এক করে ভাবতাম আমার যৌভনের দিনগুলি। কালও ছুটির ঘণ্টা বাজবে কিন্তু আমার মনে ভেতর স্মৃতির ঘণ্টা আর বেজে উঠবে না। আরো দেখুন : রচনা : একটি নতুন পয়সার আত্মকাহিনী রচনা : একটি রাজপথের আত্মকাহিনীরচনা : একটি কলমের আত্মকথারচনা : একজন ফেরিওয়ালার আত্মকথা
একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনা pdf

একটি বটগাছের আত্মকাহিনী pdf download করুন

  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা/অনুচ্ছেদের নামঃ একটি বটগাছের আত্মকাহিনী,
  • ফাইল ফরম্যাটঃ pdf download(পিডিএফ ডাঊনলোড),
  • ক্যাটাগরিঃ Bangla Rochona pdf(Rachona),
  • ধরুন- পয়েন্ট আকারে রচনা,
  • Total word: 200, 300, 400, 500, 800, 1000, 1500 শব্দ,
  • ক্লাসঃ class 6, 7, 8 ,9 10, 11, 12,
  • Psc(প্রাইমারি স্কুল), JSC(হাই স্কুল), SSC(এস এস সি), HSC(এইচ এস সি), fazil(ফাজিল), kamil(কামিল) hons, degree
এই বাংলা রচনার pdf পেতে এখানে দেখতে পারেন।


FAQ About একটি বটগাছের আত্মকাহিনী

Question1: রচনাটির কেমন?
Answer1: একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনাটি পড়লে SSC,HSC ছাত্র যেকারো অনেক জ্ঞান বাড়বে।


Question2: একটি বটগাছের আত্মকাহিনী এর পিডিএফ কি এখানে পাওয়া যাবে?

Answer2: জি, একটি বটগাছের আত্মকাহিনী রচনাটি PDF সহ সম্পুর্ন এখানে পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button