বাংলা রচনা বই PDF কালেকশন - Bangla Rochona for class 5, 6,7,8,9,10

একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনা (পয়েন্ট আকারে ৮০০ শব্দ) for All Class

২০০-৩০০, ৫০০, ৮০০, ১০০০ শব্দ পয়েন্ট আকারে একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনা pdf আকারে সম্পূর্ন এখানে পাবেন। আশাকরি, ৫ম, ৬ষ্ঠ, তম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণি ও JSC, SSC, HSC রচনা প্রতিযোগিতায় ভাল ফলাফল পেতে ও বিজয় পেতে এই একটি গ্রামে কয়েকটি দিন Bangla Rochona পিডিএফ ডাউনলোড করার মাধ্যমে এই পোস্ট আপনাকে হেল্প করবে।

Contents

একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনা বিস্তারিত

একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

আমি একদিন কল্পনায় বাংলার গাঁয়ের প্রান্তরে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছি। দেখেছি দিঘির স্বচ্ছ কালো জলে রাজহাঁস কেমন আনমনে খেলা করে, ডুমুরের সবচেয়ে বড় পাতাটির নিচে চুপচাপ বসে আছে দোয়েল, সাঝের বেলায় কলসি কাঁখে হালকা পায়ে বাড়ি ফিরছে গাঁয়ের বধূ, নিকোনো উঠোন, বাঁশঝাড়ের মাথায় মস্ত চাঁদ, লণ্ঠন হাতে বাড়ি ফিরছে হাটুটে, জেলে। কখনো দেখেছি সোনালি ধানের ওপর সোনালি রোদের খেলা, আঁকাবাঁকা মেঠো পথ ধরে চলে যাচ্ছে গরু গাড়ি, ঢেঁকির শব্দও শুনেছি। এভাবে প্রতিদিন আমি রঙিন সুতোর জাল বুনি। শৈশব পেরিয়েছি শহুরে যান্ত্রিকতায়। হতাশ হয়ে ভাবি আমার বুঝি-বা গ্রাম দেখা হলো না আর। জসীম উদ্দীনের মতো করে কেউ তো আমায় বলল না-  ‘তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে  আমাদের ছোট গাঁয়,  গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়।’  একদিন সেই দুর্লভ সুযোগ পেয়ে গেলাম। জসিম মানে আমার বন্ধু হঠাৎ এসে বলল, তুই তো সবসময় ‘গ্রাম গ্রাম’ করিস, চল তোকে আমার গ্রাম ঘুরিয়ে আনি। আমি আনন্দে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। বললাম, ‘ব্যাপার কী! সব জসিমই কি গ্রামে যাবার আমন্ত্রণ জানায় নাকি! ইশ! শহরের তাবত লোকের নাম কেন যে ‘জমিস’ হলো না!’ দুজনই বেশ একচোট হাসলাম।  গাঁয়ের নাম হিজলতলি। পাশ দিয়ে ছোট্ট যে নদীটি বয়ে গেছে তার নাম মহুয়া। এত সুন্দর হয় নদী- নদীর নাম! সেই মুহূর্তে ভুলে গেলাম শঙ্খ, তিতাস, শীতলক্ষ্য কিংবা যমুনার কথা। মনে হল মহুয়াই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নদী।  আমরা চলছি পায়ে হেঁটে। এইমাত্র বাস থেকে নেমেছি। দুপুর গড়িয়ে গেছে। গাঁয়ের পথে লোকজন তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। আমরা হাঁটছি, পায়ের নিচে শুকনো পাতা ভেঙে যাচ্ছে মচমচ করে। সরু পায়ে-চলা পথের পাশে কখনো বাঁশঝাড়, কখনো পুকুর, কখনো ঝোপ, কখনো বিস্তৃত ক্ষেত। মাঝে মাঝে দু’একটা মাটির ঘর। খালের পানিতে মাছ ধরছে একঝাঁক কিশোর-কিশোরী। কী নিয়ে যেন বেশ হল্লাও হচ্ছে। আমাদের দেখে দুজন পিছু পিছু এল অনেক দূর। ওদের চোখে অপার কৌতূহল- আমরা কোন বাড়িতে যাব। বলা বাহুল্য, জসিমকেও গ্রামের কেউ তেমন চেনে না। ওর এক চাচা ছাড়া আর সবাই থাকে শহরে। দাদা-দাদি নেই। তাই ওরও গাঁয়ে আসা হয় না।  নানারকম পাখির গুঞ্জন কানে আসছে। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে গাছগাছালির বুনো গন্ধ ছাপিয়ে মিষ্টি একটা ঘ্রাণ। জসিম জানাল, খেজুরের রস দিয়ে পায়েস আর গুড় তৈরি হচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। আজ শুক্রবার। টিভিতে বাংলা সিনেমা চলছে। তাই হয়তো পথঘাট জনশূন্য। গাঁয়ের মানুষের জন্যে টিভিই তো একমাত্র বিনোদন মাধ্যম।  জসিমদের বাড়িতে যখন পৌঁছুলাম তখন বিকেল। বাড়ির প্রত্যেকে প্রথমে অবাক। তরপরই শুরু হল কান্না। জসিমকে জড়িয়ে ধরে ও চাচা-চাচি কাঁদছে। পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে চাচাতো ভাইবোনেরা। আমি দূরে দাঁড়িয়ে দেখছি তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। একসময় হঠাৎ ওদের খেয়াল হলো। চাচি সস্নেহে আমার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে গেলেন। জামা-কাপড় পালটে উঠোনের কোনায় টিউবওয়েলে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। মাটির চুলায় টগবগে ভাতের হাঁড়ি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বেরুচ্ছে। বারান্দায় শীতলপাটি বিছিয়ে আমরা যখন খেতে বসলাম তখন সূর্য পাটে যেতে বসেছে। শীতের দিনে বেলা এমনিতেই ছোট হয়। কিন্তু আমার মনে হলো হিজলতলি নামের এই অপূর্ব ছায়া-সুনিবিড় গাঁয়ে যেন আগেভাগেই সন্ধ্যা নেমেছে। খাওয়া শেষ হতেই চাচাতো ভাবি নিয়ে এলেন দু’কাপ চা। সেই মুহূর্তে বিদুৎ চলে গেল। ভাবি বললেন, প্রতিদিন সন্ধে থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে কদিন ধরে। আমি তো মনে মনে খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম। গ্রাম দেখতে এসেছি। এখানেও যদি বিজলি বাতি জ্বলে তবে কি আর গ্রামের আমেজ পাওয়া যায়?  বেশ ঠাণ্ডা লাগছে। গায়ে ফুলহাতা সোয়েটার চাপিয়েছি। উঠোনে নেমে দেখি আকাশে মস্ত চাঁদ, অসংখ্য তারা। ভীষণ ক্লান্ত লাগছিল। তাই আর বের হলাম না। উঠোনে পাটি বিছিয়ে বসে রইলাম সবাই। রাতের খাবারের আয়োজন চলছে। কদবেল গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে জ্যোৎস্না বিচিত্র আলোছায়ার খেলা খেলছে উঠোনে। পুরো পরিবেশটাই আমার কাছে মনে হচ্ছে স্বপ্নের মতো।  পরদিন ঘুম ভাঙল পাখির ডাকে। হাতমুখ ধুয়েই বেরিয়ে পড়লাম। ধীরে ধীরে সূর্য উঠল। শিশিরভেজা গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে চলে গেলাম অনেক দূরে। পরপর তিনটে গরুর গাড়ি এঁকেবেঁকে চলছে। রসের হাঁড়ি কাঁধে নিয়ে হাটে যাচ্ছে এক লোক।  শীতকাল। পুকুরে পানি তেমন নেই। তবু দুপুরবেলা পুকুরেই গোসল করলাম। আমাদের জন্যে জাল ফেলে মাছ ধরা হলো। শহরের লোক শুনে আশেপাশের অনেকেই এসছে আমাদের দেখতে। বিকেলে গেলাম হাটে। বিশাল এক শিশুগাছের নিচে বসেছে বিরাট হাট। বিচিত্র জিনিসের সমাহার। কত দূরদূরান্ত থেকে যে লোকজন আসছে! সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলাম। চাঁদ আর জোনাকি আমাদের পথ চিনিয়ে দিল। কেবল খাচ্ছি আর বেড়াচ্ছি। কাঁচা রস, পিঠে, পায়েস যা খাই তা-ই যেন অমৃতের মতো লাগে।  পরদিন গেলাম গ্রামের অন্যদিকে। বিশাল দিঘিতে ফুটে রয়েছে হরেক রঙের শাপলা। আনমনে ঘুরে বেড়াচ্ছে পানকৌড়ি। দিঘির চারপাশে নারকেল গাছের সারি। বিকেলে স্থায়ীয় হাইস্কুল প্রাঙ্গণে গেলাম ফুটবল খেলা দেখতে। খালি গায়ে ধুলো-মাটিতে কী আনন্দ করে খেলছে ওরা! ওদের অনুরোধে আমি আর জসিমও নেমে গেলাম মাঠে। ওরা ভীষণ আনন্দ পেল। সেই সময় কিছুক্ষণের জন্যে যেন গ্রাম আর শহরের ব্যবধান ঘুচে গেল। সন্ধ্যার পর স্থানীয় ‘হিজলতলি ইয়ংস্টার ক্লাব’ -এর উদ্যোগে গানের আসর বসল ক্লাব প্রাঙ্গণে। আকণ্ঠচিত্তে উপভোগ করলাম সেই সরল, সাদামাটা গানের আসর। সেই রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিল না। কাল চলে যাব, আর কখনো হয়তো এই গাঁয়ে আসা হবে না- এটা আমি ভাবতেই পারছিলাম না।  এই ক’দিনে গ্রামে অনেক কিছুর অভাবই চোখে পড়ল। শিক্ষা থাকলেও সুশিক্ষার অভাব আছে। চিকিৎসার ভালো ব্যবস্থা নেই। নেই অবসর বিনোদনের উপকরণ- থিয়েটার মঞ্চ বা সিনেমা হল। গুটিকয়েক বিত্তশালী ছাড়া অধিকাংশ লোকজনই অভাবগ্রস্ত। এই অভাবের মাঝেও তাদের মধ্যে আছে অদ্ভুত সারল্য, মানুষের প্রতি মমতা। তাই এই গ্রাম যেন আনন্দ-বেদনা, পাওয়া না-পাওয়া, ঐশ্বর্য-রিক্ততার বাস্তব প্রতিচ্ছবি। এখানে বিলাসিতার অবকাশ নেই, নেই কৃত্রিম লোকদেখানো আতিথেয়তা। প্রতিটি মুহূর্তে পেয়েছি স্নিগ্ধ আন্তরিকতা।  বিদায়বেলায় সকলের মন বিষণ্ণ, ভারাক্রান্ত। তাদের আচরণে মনে হলো, এরা সবাই আমার অনেকদিনের চেনা। ওদের ব্যথাতুর মুখের দিকে আমি তাকাতে পারছিলাম না। সবাই আমাদের পিছু পিছু অনেকটা পথ এল বিদায় জানাতে। তারপর বাঁশঝাড়, পুকুর, ক্ষেত আর অসম্ভব সরল মানুষগুলো ছায়াছবির দৃশ্যের মতো সরে সরে যেতে লাগল। আরো দেখুন : রচনা : গ্রাম্য মেলা রচনা : আমাদের গ্রাম রচনা : পল্লী উন্নয়ন রচনা : গ্রামের হাট রচনা : একটি গ্রাম্য বাজার রচনা : একটি ঝড়ের রাত রচনা : শৈশব স্মৃতি রচনা : একটি দিনের দিনলিপি রচনা : নগরজীবন রচনা : গ্রামোন্নয়নই দেশোন্নয়ন
একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনা pdf

একটি গ্রামে কয়েকটি দিন pdf download করুন

  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা/অনুচ্ছেদের নামঃ একটি গ্রামে কয়েকটি দিন,
  • ফাইল ফরম্যাটঃ pdf download(পিডিএফ ডাঊনলোড),
  • ক্যাটাগরিঃ Bangla Rochona pdf(Rachona),
  • ধরুন- পয়েন্ট আকারে রচনা,
  • Total word: 200, 300, 400, 500, 800, 1000, 1500 শব্দ,
  • ক্লাসঃ class 6, 7, 8 ,9 10, 11, 12,
  • Psc(প্রাইমারি স্কুল), JSC(হাই স্কুল), SSC(এস এস সি), HSC(এইচ এস সি), fazil(ফাজিল), kamil(কামিল) hons, degree
এই বাংলা রচনার pdf পেতে এখানে দেখতে পারেন।


FAQ About একটি গ্রামে কয়েকটি দিন

Question1: রচনাটির কেমন?
Answer1: ইন্টারনেট হতে একটি গ্রামে কয়েকটি দিন টি কালেক্ট করে পরীক্ষায় ৩-৪ পৃষ্ঠার এর মত।


Question2: একটি গ্রামে কয়েকটি দিন এর পিডিএফ কি এখানে পাওয়া যাবে?

Answer2: জি, একটি গ্রামে কয়েকটি দিন রচনাটি PDF সহ সম্পুর্ন এখানে পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button