বই রিভিউ ও ডাউনলোড

মুক্ত বাতাসের খোঁজে Pdf link – Mukto Batasher Khoje Book Pdf

Mukto Batasher Khoje Book Pdf download free google drive

বই:- মুক্ত বাতাসের খোঁজে pdf download
লেখক:- লস্ট মডেস্টি
সম্পাদক:- আসিফ আদনান
শার’ঈ সম্পাদনা:- শাইখ মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির
প্রচ্ছদ:- ইয়ামিন সাজিদ
প্রকাশনী:- ইলমহাউস পাবলিকেশন
মূল্য:- ২৩০ টাকা।
জনরা:- আত্ম উন্নয়
রেটিং:- ৫.০০/৫.০০
epub bangla, MOBI Bangla, kindle bangla Ebook, Pdf free Download(পিডিএফ ডাউনলোড)
ডাউনলোড লিংক এই পোষ্টের শেষের দিকে দেওয়া হয়েছে. 
Mukto bataser khoje online read Review full:
ভূমিকা:- বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আমি প্রথমই আল্লাহর নাম নয়ে বইটির রিভিউ শুরু করতে যাচ্ছি। বইটি একটা মানুষের জীবনকে বদলে দিতে সক্ষম। লস্ট মডেস্টি টিম আপনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বই আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটি প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী থেকে বৃদ্ধ পিতা-মাতাদের অবধি পড়া প্রয়োজন। এই বইটি আপনাকে শিক্ষা দেবে, আজকালের সমাজের সমন্ধে। ধারণা দেবে আপনার চরিত্র সম্পর্কে। ধারণা দেবে আপনি কীসের মধ্য দিয়ে পার হচ্ছেন সেই সম্পর্কে। আপনাকে জানাবে, যৌনতা নিয়ে অশ্লীলতার সংজ্ঞা। জানাবে কীভাবে আপনি পশ্চিমাদের বহমান স্রতের মাঝে মিলিয়ে যাচ্ছেন।
সমাজ:- এই টপিকটা রাখা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। আমাদের সমাজে বর্তমানে কী হচ্ছে এবং কী ঘটবে আগামীতে তা নিয়ে বিস্তর লেখা হয়েছে মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটির প্রতিটি অধ্যায়। আমাদের সমাজ ইতোমধ্যে কলুষিত হয়ে গেছে। এবং বাকি যা আছে, আমরা তা আরও কলুষিত করে ফেলতেছি। বর্তমান সমাজটা সবদিক থেকে অশ্লীলতা দিয়ে ভরপুর। আপনি যেখানে তাকাবেন যৌনতা,অশ্লীলতা। আপনি ঘরের মাঝে থাকেন কিংবা বাহিরে। সবখানে কেবল একটা জিনিসই নজরে পড়বে। তা হলো, যৌনতা,অশ্লীলতা। নারী হয়ে গেছে আমাদের সমাজে সস্তা পণ্য। আমরা নারীকে ঠিক পণ্য আকারে উপস্থাপন করতেছি। এবং দিন দিন বেড়েই চলেছে ধর্ষণের হার। আমরা এখন যা কিছুই করতে যাচ্ছি না কেন, সকল কিছুতেই যৌনতা, অম্লীকৃত যুক্ত। খবরের ফ্রন্ট পেইজে বড় করে নারীর অর্ধ নগ্ন দেহটা টাঙিয়ে দেয়া হয়। প্রত্যেকটা প্রডাক্টের মার্কেটিং করতে হলে অর্ধ নগ্ন নারী দিয়ে করি। এবং এর আদলেই বেড়ে চলেছে সকল কিছু।
বাস্তবতা:- আজ থেকে দশ বছর আগেই ধরুন। কয়টা ছেলের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিল? কয়টা ছেলে হাই স্পিড ইন্টারনেট ইউজ করত? শতকরা ১০ ভাগ হবে কি না সন্দেহ! কিন্তু বর্তমানে সন্তান দুনিয়ার মুখ না দেখতেই হাতে ফোন ধরিয়ে দিই পারলে। সাথে যুক্ত থাকে হাই স্পিড ইন্টারনেট। এবং সবচেয়ে সহজলভ্য যৌনতা যুক্ত পর্ন এখন সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের সমাজে জেনারেল লাইনে পড়ুয়া ১৫ থেকে শুরু করে এমএ পাশ হোক কিংবা ডিগ্রি। কোনো ছেলে যদি বলে আমি জীবনে একবারও পর্ণ এবং মাস্টারবেট করিনি; তবে তার মতো মিথ্যাবাদী আর একটাও নেই। বিভিন্ন রিসার্চের তথ্য মোতাবেক পর্নোগ্রাফির আসক্তি এবং মাস্টারবেটের প্রভাব ফেলেছে ক্লাস এইট থেকে অনার্সে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের মধ্যে। এরা অন্তত একবার হলেও পর্ন দেখেছে এবং মাস্টারবেট করেছে। এবং এই সংখ্যাটা এখন আর কেবল ছেলেদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। যুক্ত হয়েছে মেয়েরাও। একাধিক মেয়েরা পর্ন দেখেছে এবং মাস্টারবেটের মতো জঘন্য কাজেও লিপ্ত হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান সমাজ অনুসারে এটি খুব কমন বিষয়। প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ে এখন অপ্রাপ্ত বয়সেই সেক্স সমন্ধে ধারণা রাখে। অল্প বয়সেই পেকে যাওয়া বন্ধুদের দ্বারা নষ্ট হয় ফ্রেন্ড সার্কেলে বিদ্যমান সকল ছেলে-মেয়েগুলো। আমার নিজের ধারণা এবং তথ্য মোতাবেক জানতে পেরেছি, আজকালকার ছেলেদের মাঝে প্রত্যেকটা জেলায়, প্রত্যেকটা থানায় এবং প্রত্যেকটা স্কুলে, প্রত্যেকটা ক্লাসে অন্তত দুজন করে হলেও অল্প বয়সেই পেকে যাওয়া ছাত্র আছে। যারা ক্লাসের মাঝে পর্ন দেখা হতে শুরু করে মাস্টারবেট অবধি করে থাকে। লজ্জাজনক হলেও সত্য এই তথ্যটির সাক্ষী খোদ আমিসহ যাদের থেকে তথ্য নিয়েছি তারাও। এছাড়াও আড্ডাতে নারীদের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে চলে রসালো আড্ডা। যা টিনেজারদের মনে আঘাত হানে। এবং ঝুকে পড়ে পর্নগ্রাফির দিকে। এবং ফলস্বরূপ আসক্ত হয় মাস্টারবেট,হস্তমৈথুনে।
সমাজটা এখন এমন একটা দিকে মোড় নিচ্ছে, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। এই পর্নের জন্য কেবল মেয়েরা অথবা মেয়ে শিশুরাই যে যৌন নিপিড়নের শিকার হচ্ছে তা কিন্তু না। এলাকার বড় ভাই,কাযিন ইত্যাদি অন্যান্য লোকেদের দ্বারা ছেলে শিশুগুলোও যৌন নিপিড়নের শিকার। পর্নোগ্রাফি দেখার পর ছেলে শিশুগুলোকে ভুলিয়ে ভালিয়ে অ্যানাল সেক্সের মতো বাজে কাজ করা হয়। যার প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। ছেলে শিশুদের মাঝে ৮৫% শিশু বড় হবার আগেই যৌন নিপিড়নের শিকার হয়। পর্নোগ্রাফি দেখার বয়সটা এখন আর ১৫ বা ১৮তে আটকে নেই। এই বয়সটা

কমে এখন দশ থেকে বারো বছরে চলে এসেছে। এই বয়সের বাচ্চাগুলো কোনো না কোনোভাবে পর্নোগ্রাফির সংস্পর্শে চলে আসছে। যা আগামীর জন্য হুমকিস্বরূপ।

বই নিয়ে ধারণা:- এই বইটাতে মোট ২২৮টি পৃষ্ঠা আছে। ভাগ আছে দুটি এবং দুটি ভাগে অধ্যায় আছে মোট ২৩টি। প্রথম ভাগে ১০টি এবং দ্বিতীয় ভাগে ১৩টি। এই ২৩টি অধ্যায় আপনার যাবতীয় তথ্য এবং শতভাগ সত্য দিয়ে লেখা হয়েছে। এছাড়াও বইটিতে বিভিন্ন গবেষণার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দেয়া হয়েছে। নিচে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে সোর্স। বইটি আধুনিক এবং বিজ্ঞান রিলেটেড। পর্নোগ্রাফি আসক্তি এবং মাস্টারবেট আসক্তি নিয়ে লেখা হয়েছে। সাথে লিখা হয়েছে পর্নোগ্রাফি এবং মাস্টারবেট থেকে মুক্তি পাওয়ার পন্থা। লেখা হয়েছে পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকর সমস্ত দিকগুলো। যা পড়ার পর একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের রক্ত হিম হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। বইটি অবশ্যই সুস্থ এবং ভালো মানুষের জন্য লেখা। একজন সেকুলারের জন্য বইটি লেখা হয়নি যা বইয়ের শেষ দিকে লেখক খোদ নিজেই বলে দিয়েছিলেন। ইনশাআল্লাহ আমি চেষ্টা করব ২৩টি অধ্যায়ের উপর বিস্তারিত রিভিউ দেয়ার।
প্রচ্ছদ:- বইটির প্রচ্ছদ চারপাশ সাদা। কেবল মধ্য দিকে নিচ থেকে উদিত একটি ফুলগাছ। যার ডালগুলো ভঙ্গুর। এবং ফুলটির পাপড়ি পাঁচটির মাঝে চারটিই ঝরে পড়ার পূর্বমুহূর্ত। এই ঝরে যাওয়া পাপড়িগুলো দিয়ে বুঝানো হয়েছে আমাদের ঝরে পড়া জীবনকে। মধ্যখানে দন্ডায়মান একটি পাপড়ি দিয়ে বুঝানো হয়েছে, আমাদের জীবনটা ঝরে যেতে যেতেও সুখ-শান্তি, সতেজ বিদ্যমান। আমাদেরকে প্রচ্ছদ থেকেই বইটি সমন্ধে অল্পবিস্তর ধারণা দিয়ে দেয়। ঝরে পড়া জীবনকে কীভাবে সতেজতা ফিরিয়ে আনা যায় তার উপর বইটির প্রচ্ছদ নিজে প্রমাণ দেয়।
উৎসর্গ:- বইটির উৎসর্গ পর্বে উৎসর্গ করা হয়েছে নীল দুনিয়ায় আটকে পড়া ভাইদের প্রতি। নিতে বলা হয়েছে ভালোবাসা। এবং স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যাতে হারিয়ে না যাওয়া হয়। উৎসর্গ পর্বটি সত্যি মন মুগ্ধকর।
প্রথম খন্ড:- অনিবার্য যত ক্ষয়ঃ-/
অধ্যায়:)
* মাদকের রাজ্যে:-
এই অধ্যায়টি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহন করে। অধ্যায়টি জুড়ে লিখা আছে মাদকাসক্তির মতো পর্নগ্রাফিও কতটা ভয়ানক। যা আমাদের দেহ,মন এবং জীবনকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। এই অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে আমাদের মস্তিষ্ক নিয়ে। পর্নোগ্রাফি আমাদের মস্তিষ্কে কতটা ক্ষতি করে এবং কতটা ভয়ানক প্রভাব ফেলে আমাদের মানব জীবনে তার বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে ডোপামিন, অক্সিটোসিন, রিসেপ্টর নার্ভ, ফ্রন্টাল লোব ইত্যাদি নিয়ে বিস্তর আলোচনা। যা আমাদের জন্য অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যায়টি পড়ার পর আপনার অনুভব হবে, এগুলো আগে কেন জানিনি? দেহের কতটা ক্ষতি করে ফেলেছি। এরকম আরও নানান চিন্তাভাবনা। সুস্থ জীবনে ফেরার জন্য এই একটি অধ্যায়ই আমার মতে যথেষ্ট।
* চোরাবালি:-
এই অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে হস্তমৈথুন (masturbation) নিয়ে। সাথে এই অধ্যায়ে দুটি মানুষ বাস্তবিক জীবনের গল্প নিয়ে লেখা হয়েছে। তারা পর্ন আসক্ত হয়ে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। যা পড়ার পর অনেকাংশে সাধারণ মানুষের জীবনের সাথে আংশিক মিলে যাওয়াটা স্বাভাবিক।
* হস্তমৈথুন : বিজ্ঞানের আতশ কাচের নিচে:-
এই অধ্যায়টি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে পর্নোগ্রাফি এবং মাস্টারবেট আসক্তি ও এগুলোর কুফল সম্পর্কে। অধ্যায় জুড়ে লেখা হয়েছে, ‘ হস্তমৈথুন তৈরি করবে নানা ধরনের যৌন জটিলতা, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি, হস্তমৈথুনের ফলে টেস্টোস্টোরোনের পরিমাণ কমে যেতে পারে, মানব দেহে টেস্টোস্টোরোনের ভূমিকা, শরীরে যদি টেস্টোস্টোরোনের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে কী হতে পারেসহ ‘ ইত্যাদি আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে।
মানব দেহে টেস্টোস্টোরোনের ভূমিকা হলো: ১) এনার্জি 2) স্মৃতিশক্তি ৩) মনোযোগ ৪) আত্মমর্যাদাবোধ ৫) আত্মনিয়ন্ত্রণ ৬) সুগঠিত পেশি ৭) দৈহিক শক্তি ৮) কাজ করার সক্ষমতা ৯) গলার স্বরের গম্ভীরতা ১০) মানসিক প্রশান্তি ১১) পুরুষালি আচরণ ১২) প্রভাবশালী আচরণ ১৩) লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন ১৪) হাড়ের স্বাভাবিক গঠন ১৫) যৌন ক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত আমিষ সরবারাহ ১৬) দীর্ঘস্থায়ী যৌন ক্রিয়াতে সক্ষম করা ১৭) স্বাস্থ্যকর মেটাবলিজম উৎপাদন ১৮) লিভারের কার্যাবলি ১৯) সুগঠিত প্রস্টেট গ্রন্থি গঠন।
মানব দেহে টেস্টোস্টোরোনের গুরুত্ব অনেক। এবং এটি মাস্টারবেট করার কারণে দেহ থেকে কমে যেতে থাকে। এবং কমে গেলে যা যা প্রব্লেম দেখা দেয় শরীরে।
১. ক্লান্তিভাব ২. বিষন্নতা ৩. দুর্বল স্মৃতিশক্তি ৪. মনোযোগ কমে যাওয়া ৫. অতিরিক্ত অস্থিরতা ৬. কম শারিরীক সক্ষমতা ৭. আত্মনিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া ৮. পুরুষালি আচরণ কমে যাওয়া ৯. আচরণে মিনমিনে ভাব আসা ১০. স্বাভাবিক যৌনক্রিয়াতে আগ্রহ না থাকা ১১. দ্রুত বীর্যপাত ১২. দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ১৩. মেরুদণ্ডে ব্যথা ১৪. পেশি সুগঠিত না হওয়া ১৫. শরীরে চর্বি জমে যাওয়া ১৬. হাড় ক্ষয়ে যাওয়া ১৭. চুল পড়ে যাওয়া।
এবং হস্তমৈথুনের কারণে হতে পারে প্রটেস্ট (মূত্র থলি) ক্যান্সার। এবং দেহের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যাওয়াসহ আরও রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা। হস্তমৈথুন ডোপামিনের কার্যকরীতা নষ্ট করে দেয়। ফলে মানুষ হয়ে যায়, ‘ i. বিষন্নতা ii. অসামাজিক iii. ছোট ছোট ব্যাপারগুলো থেকে আনন্দ কম পাওয়া iv. উদ্যমহীন, কুঁড়ে হয়ে যাওয়া।
হস্তমৈথুনের কারণে আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে। এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত লেখা হয়েছে অধ্যায়টি। যা জানা একজন সুস্থ মানুষের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
* ১০৮টি নীলপদ্ম:-
এই অধ্যায় জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে বিভিন্ন গবেষণা এবং তার ফল নিয়ে। অধ্যায়টিতে লিখা হয়েছে আনাচে-কানাচেতে করা সকল প্রকার গবেষণার তথ্য। হস্তমৈথুন, সমকামী, পতিতা,পর্নোগ্রাফিসহ আরও বিভিন্ন ধরণের বিষয় নিয়ে গবেষণা ছিল অধ্যায় জুড়ে। যা পড়ার পর আমার শরীরের রক্ত হিম হয়ে গেছিল। আমাদের পৃথিবী কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কল্পনা করলে সুস্থ মানুষ কখনো স্বাভাবিক থাকতে পারে না।
* মৃত্যু? দুই সেকেন্ড দূরে!:-
এই অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে পর্নোগ্রাফি নিয়ে। এবং তার প্রভাব আমাদের সমাজের শিশুদের উপর কী পরিমাণ প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে। অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল পর্নোগ্রাফি। আমি রীতিমতো হয়রান হয়ে গেছি এই অধ্যায়ের আলোচনায়। কী পরিমাণ ভয়ানক সকল তথ্য দিয়ে ভরপুর রেখেছিল লেখক! শিশুরা কীভাবে ধর্ষণের দিকে ঝুঁকছে তার বিস্তারিত গবেষণার ফলাফল দেখে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। শিশুরা সফট পর্ন থেকে হার্ডকোর পর্নের দিকে আসক্ত হচ্ছে দিন দিন। সাথে অ্যানাল সেক্স, ওরাল সেক্সসহ আরও জঘন্য সকল জিনিস শিখছে তারা। বাড়ছে তাদের যৌন চাহিদা। হস্তমৈথুন করে নিজেদের নিবারন করতে ব্যর্থ হয়ে লিপ্ত হচ্ছে ধর্ষণে। ফলে বেরিয়ে পড়ছে ধর্ষণের দিকে। পা বাড়াচ্ছে ধর্ষণের রাস্তায়।
তথ্য-উপাত্তর ভিত্তিতে ইংল্যান্ডে ৪ বছরে ১৭ বছরের কমবয়সীদের দ্বারা ধর্ষণের ঘটনা দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে অভিযুক্ত হয়েছে ১২০ জন। ২০১১ সালের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি। তবে ২০২১ সালে কতদূর বেড়েছে! অস্ট্রেলিয়ার সাইকোলজিক্যাল সোসাইটির ধারণা অনুযায়ী ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কা নারীদের ধর্ষণের জন্য দায়ী কিশোরেরা এবং শিশুদের চালানো যৌন নিপিড়নের ৩০-৩৫ শতাংশর জন্য দায়ী কিশোররা। তবে তো এখন এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে!
আইটেম সং এবং পর্নের দ্বারা যুবকেরা ধাবিত হচ্ছে ধর্ষণের দিকে। যা একটি মর্মাহত বার্তা ধারণ করে সমাজের বুকে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীর পৃথিবীতে আমার ঘরের নারীরা মোটেও নিরাপত্তায় নেই। খোদ আমাদের দ্বারাই তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।
* নীল রঙের অন্ধকার:-
এই অধ্যায়টি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে দীর্ঘশ্বাস আর নীরব আর্তনাদে ভরপুর নষ্ট হবার গল্প দিয়ে। অধ্যায়টি লস্ট মডেস্টির কালেক্ট করা মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া সকল সত্য গল্পগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। যেই গল্পগুলো মানুষের জীবনের সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্থ গল্প। যা চাপা আর্তনাদে ভরা। যে গল্পগুলো ব্যর্থতা দিয়ে ভরা। অধ্যায়টি পড়ে সত্যিই হৃদয় মর্মাহত হয়েছে। ভয় লেগেছে আমার এবং আমার আশেপাশের লোকজনদের জীবন নিয়ে। আমাদের জীবনের গল্পটাও কি তাদের মতোই হবে? একটা চাপা কষ্ট কাজ করেছে বারবার।
* পর্দার ওপাশে:-
এই অধ্যায়টি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়ে লেখা হয়েছে পর্নে দেখানো চিত্রটির বাস্তব চিত্র। আমরা ভাবি পর্ন বোধহয় মজার জন্যই করে থাকেন পর্ন স্টাররা। কিন্তু জানতে চাই না পর্দার ওপাশে কী হচ্ছে তা সম্পর্কে। ধ্যান নেই আমাদের তা নিয়ে। আমরা কেবল তাদের মতো হতে চাই এবং তাদের মতো সঙ্গিনী খুঁজে বেড়াই। অথচ তাদের জীবনটা যে কতটা দুর্বিষহ, দুঃখ, চাপা কষ্টে ভরা তা জানতে চাই না। এই অধ্যায়ে লেখা হয়েছে দুঃখে ভরা একজন সাবেক পর্ন অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি দিয়ে। তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, ‘ আসল সত্যটা হচ্ছে আমি কখনোই চাই না এসব দৃশ্যে অভিনয় করতে। কিন্তু ওইসব দৃশ্যে অভিনয় না করলে আমি কখনোই এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাব না। ১০৪° ডিগ্রি জ্বর নিয়েও আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা শুটিং করতে হয়েছে। আমি কাঁদছিলাম। খুব করে চাইছিলাম বাসায় চলে যেতে। কিন্তু আমার এজেন্ট চাচ্ছিল না শুটিং অসমাপ্ত রেখে বাসায় চলে যাই। নিরুপায় হয়ে প্রচন্ড শরীর খারাপ নিয়েই কাজ করতে হয়েছে। আমার পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে শুরুটা হয়েছিল গণধর্ষণের ভিডিও দিয়ে। পাঁচ জনকে দিয়ে ট্রেইনর আমাকে ধর্ষণ করিয়েছিলেন। এ ঘটনা আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। তিনি হুমকি দিয়েছিলেন এসব কাজ না করলে আমাকে গুলি করবেন।…… ‘ এরকম আরও স্বীকারোক্তি আছে। এই অধ্যায়ে পর্নোগ্রাফিতে নির্যাতনসহ অমানবিক জুলুম এবং পর্ন শুটিং করতে যেয়ে মৃত্যুর হার লেখা হয়েছে।
তথ্য মোতাবেক ২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ায় পর্ন ইন্ডাস্ট্রির প্রায় ১৫০০ যৌনকর্মীর ২২৮ জন মৃত্যুবরণ করেছে। তাদের মৃত্যুর কারণ এইডস,আত্মহত্যা, মাদক সেবন। মাদকাসক্তির উচ্চ হার রয়েছে এই পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে। ড্রাগস দিয়ে বিভিন্ন ভয়ানক সকল পর্ন ভিডিও তৈরি করা হয়। তাছাড়া মানবপাচারের প্রধান অংশ হিসেবে রয়েছে পর্ন ইন্ডাস্ট্রি। প্রতি বছর এক লাখের মতো শিশু পাচার হয় পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে। এই বিষয় বিস্তারিত লেখা হয়েছে এই অধ্যায়। যা পড়ার পর আমার রক্ত হিম হয়ে গেছে।
* অঙ্গার:-
এই অধ্যায়ে বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। সাথে আলোচনা করা হয়েছে সিরিয়াল কিলার, রেইপিস্ট, নরপিশাচ ‘ রবার্ট বান্ডি’কে নিয়ে। তাকে মানুষ টেড বান্ডি বলেই জানত। টেড বান্ডি কীভাবে রেপিস্ট হলো সেই মর্মান্তিক গল্পটাও আছে এই অধ্যায়। আরও আলোচনা করা হয়েছে ইন্ডিয়ার উত্তর প্রদেশে প্রচলিত নারী ধর্ষণের ভিডিও ৫০-১৫০ রুপির বিক্রি নিয়ে। বিশ্বের বেশি ধর্ষণ হওয়া দেশগুলোর শীর্ষ দশটি লিস্টের মাঝে আছে ইন্ডিয়া।
২০০৭ সালের আমেরিকান এক জরিপে দেখা গেছে, কলেজ এবং ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘ ৬ লাখ ৭৩ হাজার ‘ জন জীবনে একবার হলেও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। প্রতি ২১ ঘন্টায় কোনো না কোনো কলেজে ধর্ষণ ঘটে। প্রতি ১২ জন কলেজগামী পুরুষ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন ধর্ষণের সাথে জড়িত। ইংল্যান্ডে প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন নিজ প্রতিষ্ঠানেই ধর্ষণের শিকার হন।
বারাক ওবামা স্বীকার করে যে, পরিসংখ্যানে আমিরিকান কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে প্রতি ৫ জন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন ধর্ষিত হয়েছে। এই বিষয় ভয়ানক সকল তথ্যগুলো লেখক সোর্সসহ উলেক্ষ করেছেন।
ছয় বছরের বেশি সময় নেভিতে কাজ করা জেইম লিভিংস্টোন-এর স্বীকারোক্তি আছে এই অধ্যায়ে। তার স্বীকারোক্তি ছিল, ‘ আমি জানতাম ইউএস আর্মির কালচারটাই এমন যে, সৈনিক এবং অফিসাররা রেইপ করাকে তাদের অধিকার মনে করে। তাই আমি রেইপের ঘটনাগুলো চেপে যেতাম। আর আমার বস-ই আমাকে রেইপ করত, কাজেই আমি কার কাছে অভিযোগ করব?’
একে একে অনেক আর্মি নারীরা তাদেরকে করা যৌন-নির্যাতনের ঘটনাগুলো বলছিল।
পেন্টাগনের পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত আমেরিকার সেনাবাহিনীর ভেতরে ঘটা যৌন-নির্যাতনের মাত্র ১৪ ভাগ ঘটনা রিপোর্ট করা হয়। বাকি ৮৬ ভাগ থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। পেন্টাগনের ২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউএস আর্মিতে প্রতিবছর উনিশ হাজারের মতো যৌন-নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ২০১১ সালে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ হাজার। ২০১৬ সালে সংখ্যাটা ৭০ হাজার। তবে ২০২১ সালে কত?
২০১৪ সালে আমেরিকান আর্মিতে ৭৬৭৬টি শিশু (তাদেরই সহকর্মীদের সন্তান) নির্যাতনের অফিসিয়াল রিপোর্ট করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, রিপোর্ট করা হয়নি এমন কেসের সংখ্যা আরও বেশি। আমেরিকার মতো দেশগুলোতেই খোদ আর্মিতেই ধর্ষণের ঘটনা দিয়ে জর্জরিত! যারা ভাবেন আমেরিকায় ধর্ষণ হয় না বা কম তারা বোকার সর্গে বাস করছেন। সবচেয়ে বেশি নারীবাদীদের দেশ এটা হলেও এই দেশেই সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে।
বাংলাদেশেও বাড়ছে এই নির্যাতন, ধর্ষণের হার। বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও হত্যার সংখ্যা ২০১৪ সালে ১১৫। ২০১৫ সালে ১৪১। ২০১৬ সালে ১৫৮। এবং ২০১৭ সালে প্রথম ছয় মাসে ধর্ষণের শিকার ১৪৪ শিশু। তবে ২০২১ সালের রিপোর্ট কত!
কেন আজ বিশ্ব জুড়ে ধর্ষণের মহা উৎসব? কেন নারী-স্বাধীনতা আর ব্যক্তিস্বাধীনতার ঢ্যারা পেটানো আমাদের এই মহান সভ্যতায় প্রতিনিয়ত নারীদের নির্যাতিত হতে হচ্ছে? কেন প্রতি ৯৮ সেকেন্ডে একজন আমেরিকানকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে? কেন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাবার সাথে সাথে বাড়ছে ধর্ষিতা নারীর লাশের মিছিল?
বিস্তারিত আরও অনেক লেখা আছে। যা পড়া আমাদের জন্য জরুরি। আমার তো পড়তে পড়তে চোখ অশ্রুসিক্ত হয় গেছিল। আমার মতে প্রত্যেককে জানা প্রয়োজন এই বিষয়গুলো।
* মিথ্যের শেকল যত:-
এই অধ্যায় আলোচনা করা হয়েছে পর্ন নিয়ে যত এক্সপেরিমেন্টগুলো নিয়ে। যেখান থেকে জানা যাবে বিস্তারিত আলোচনা। পর্ন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ না করার প্রধান কারণও এই অধ্যায় আলোচনা করা হয়েছে। ভয়ানক সকল সত্য তথ্য দিয়ে এই অধ্যায়টি লেখা হয়েছে এবং জুড়ে দেওয়া হয়েছে তথ্যগুলো কালেক্ট করা সোর্সগুলো।
গ্লোবাল পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত শত শত বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। ২০০৬ সালে এই ইন্ডাস্ট্রির মোট আয় ছিল ৯৭ বিলিয়ন ডলার। মাইক্রোসফট, গগল, অ্যামাজন, ইয়াহু, অ্যাপল এবং নেটফ্লিক্সের সম্মিলিত আয়ের চেয়েও বেশি। বছরে পর্ন ইন্ডাস্ট্রির প্রফিট ১৫ বিলিয়ন ডলার। সে তুলনায় হলিউডের বাৎসরিক প্রফিট? ১০ বিলিয়ন ডলার। আর এগুলোতো শুধু ঘোষিত আয়ের হিসাব। পর্ন ইন্ডাস্ট্রির বড় অংশের কখনো রিপোর্টেড হয় না।
আরও এরকম বিভিন্ন তথ্য দিয়ে অধ্যায়টি পরিপূর্ণ। পড়ার পর আপনার রক্ত হিম হবেই। আপনি শিউরে উঠবেন এ-সব বিষয়গুলো জানার পর। প্রত্যেকটি মানুষের এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা বাধ্যতামূলক।
দ্বিতীয় খন্ড:- বৃত্তের বাইরেঃ-/
অধ্যায়:)
* লিটমাস টেস্ট : যেভাবে বুঝবেন আপনি পর্নগ্রাফিতে আসক্ত:-
এই অধ্যায়টি জুড়ে কয়েকটি ধাপে আপনাকে নিজে নিজেই উপলব্ধি করাবে আপনি কি পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত? নাকি আসক্ত এখনো আপনাকে গ্রাস করতে পারেনি। মোট পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছে অধ্যায়টিতে। এবং তার বিস্তারিত আলোচনা। আর এই পাঁচটি প্রশ্নের সাথে একটির সাথে মিলে গেলেই পর্নোগ্রাফি আপনাকে ছোবল দিয়ে ফেলেছে। আর পাঁচটিই যদি মিলে যায় তবে তো হলোই। এই অধ্যায়টি পড়ে আমাদের নিজেকে জাস্টিফাই করা অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
* বাড়িয়ে দাও তোমার হাত:-
দিনশেষে লড়াইটা আপনার। পর্নোগ্রাফি অথবা হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি কীভাবে পেতে হবে কিংবা লড়াই করতে হবে তা খোদ আপনারই। আপনার লড়াইটা আরেকজন লড়বে না। অনেকটা কেয়ামতের ময়দানে ইয়া নাফসি ইয়া নাফসির মতো বিষয়। এই অধ্যায়টি লেখা হয়েছে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেওয়ার উপর। আপনার হাত বাড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে কিছু নবী-রাসুলগণসহ আরও বুজুর্গগণের জীবনী সম্পর্কে। যা আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়াতে সাহায্য করবে। তাছাড়া নিজের উপর তাওয়াক্কুল কীভাবে রাখা যায় তার মূল মন্ত্র উল্লেখ করা হয়েছে।
তাওয়াক্কুলের পূর্বশর্ত দুইটি। ১. সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর উপর আস্থা রাখা, বিশ্বাস রাখা। ২. আপনার হাতের কাছে যেসব মাধ্যম বা উপায় আছে সেগুলো ব্যবহার করে নিজেকে সর্বোচ্চ ও সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
এই বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই অধ্যায়ে। জানার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে আপনার। মনে হবে আমি পারব এই অন্ধকার জগৎ থেকে।
* ব্রেক দা সার্কেল:-
পূর্বের অধ্যায়গুলো থেকে আপনি ধৈর্য, মানসিক দৃঢ়তা আর আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করার শিক্ষা পেয়েছেন। এবার আপনার পালা মুক্ত বাতাসের খোঁজে বেরিয়ে পড়া। এই অধ্যায় জুড়ে লিখা হয়েছে আপনার অতীত স্মৃতিগুলো ডায়েরি বন্ধ করার কথা। কীভাবে আসক্ত হয়েছেন থেকে শুরু করে এ অবধি কী কী করেছেন সবটুকু লিখে রাখার জন্য বলা হয়েছে । এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাছাড়া এই অধ্যায় জুড়ে নিজেকে কীভাবে হেফাজত করা যায় সেই সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা করা হয়েছে চোখের হেফাজতের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, সপ্তাহে দুদিন রোযা রাখা এবং প্রচুর পরিমাণে দান-সদকাহ করার। আপনার আসক্তির পরিমাণ কীভাবে কমানো যায় তারও অল্প বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে এই অধ্যায়ে।
* ফাঁদ:-
আমাদের ধৈর্যটা অনেকটা জোর করার মতো। আল্লাহকে ধৈর্য দান করতে বলি। বলি এখনই দাও, ঠিক এখনই, একটুও দেরি না করে ঠিক এই মুহূর্তেই। বিষয়টা ঠিক এমনই। আমরা কোনো বিষয়ে চেষ্টা করলে যেন একবারেই সফল হয়ে যাই এই চিন্তাভাবনা থাকে। এই অধ্যায় জুড়ে আমাদের ধৈর্য এবং শয়তানের তৈরি ফাঁদ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। আমাদেরকে শয়তান কীভাবে তার ফাঁদে জড়িয়ে নিচ্ছে আর আমরা কীভাবে না চাইতেও তার ফাঁদে পা দিয়ে ফেলছি তা এই অধ্যায় না পড়লে বিস্তর জানার সুযোগ নেই। আমরা নামাজ নিয়ে কিংবা অন্যান্য বিষয় নিয়ে কী রকম আল্লাহ’র সাথে ওয়াদা করি এবং তা ভঙ্গ করি তা এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া শয়তান আমাদেরকে কীভাবে পর্ন দেখায় জোর করে এবং এরপর কীভাবে আমাদের মনে প্রভাব ফেলে তারও বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে।
পর্ন ভিডিও দেখে হস্তমৈথুন আজকেই শেষবারের মতো আর কখনো করব না। এরকম চিন্তাভাবনা করায় শয়তান। এবং তার পাতা ফাঁদে আমরা পা দিয়ে ফেলি। আর ‘ এই আর করব না, আর করব না ধাঁধায় আটকে পড়ি।’
তাছাড়া তরুণদের জন্য বড় একটা ফাঁদ হচ্ছে, আমার বউ নেই বলা। বর্তমানে এই বিষয়টি নিয়ে একটি মন্তব্যও করেনি কিংবা ফ্যান্টাসিতে ভোগেনি এমন তরুণ একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রত্যেকজনের স্বপ্ন হয়ে গেছে বিয়ে করা। অনেকে হস্তমৈথুন থেকে প্রতিকার পাবার প্রধান অস্ত্র হিসেবে এই বিয়েকেই ধরে নিয়েছে। শয়তান আমাদেরকে এই বিয়ের মাধ্যমেই বিশাল বড় অন্যায় কাজ করিয়ে নিচ্ছে। সকল কিছুর কারণ হিসেবে আমরা বলি, আমার বউ নেই। বউ থাকলে এমন করতাম, অমন করতাম। আমাদের আফসোসে পরিনত হয়ে গেছে এই বিষয়টি। প্রথমত বিয়ে কোনো ম্যাজিক বাটন না যে, চাপ দিলেই সকল কিছু করা সম্ভব কিংবা সব সমস্যার সমাধান। শয়তান আমাদেরকে এই ফিৎনায় ভালো করেই আঁকড়ে ধরেছে। আমাদের মাঝে অনেকেরই ভাবনা, বিয়ে করলেই পর্ন আসক্তি কিংবা মাস্টারবেট আসক্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাব। এই ভাবনা যদি কেউ করেন, তবে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করবেন। একসাথে দুটো জীবনকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেওয়ার জন্য দায়ী থাকবেন আপনি। তাই বিয়ের জন্য এত তাড়াহুড়ো না করে নিজেকে যোগ্য করে তুলুয় এবং সকল আসক্তি থেকে মুক্ত করে এরপর সামনের দিকে পা বাড়ান।
তাছাড়া এই অধ্যায়ে আরও বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে শয়তানের তৈরিকৃত ফাঁদ সম্পর্কে। যা আমাদের জানা এবং এ থেকে বেঁচে থাকা অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
পাঁচটি ধাপে উল্লেখ করা হয়েছে কীভাবে পাপ কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবেন। পাঁচটি ধাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। এবং আমাদের পালন করাও উচিত এই ধাঁপগুলো।
এই যৌন সুড়সুড়িতে সয়লাব সমাজে কি আদৌ চোখের হেফাজত করা সম্ভব? জি, কঠিন হলেও সম্ভব। কীভাবে এই সম্ভব তার বিস্তর আলোচনা এই অধ্যায় আলোচনা করা হয়েছে।
শয়তানের বিভিন্ন ফাঁদের মাঝে আরও একটি ফাঁদ হলো স্বপ্নদোষ। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের সমাজে নানান রকম মিথ্যে গল্পগুজব রয়েছে। রটানো আছে নানান রকমের মিথ্যে উপন্যাস। আমাদের পিতা-মাতাদেরও স্বপ্নদোষ নিয়ে রয়েছে ভ্রান্ত ধারণা। যার বলি হতে হচ্ছে আমাদের। ছেলে-মেয়েরা পরিমিত বয়স হলে স্বপ্নদোষ হওয়াটা অস্বাভাবিক বিষয় না। পিরিয়ডের মতো এটিও একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু সমাজে এটি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা থাকার কারণে ছেলেমেয়েরা ধেয়ে যাচ্ছে পর্নোগ্রাফি, হস্তমৈথুনের দিকে। কীভাবে যাচ্ছে তার বিস্তারিত আলোচনা এই অধ্যায়ে দেয়া আছে। এবং এই স্বপ্নদোষকেই কীভাবে শয়তান হাতিয়ার বানিয়ে পর্নোগ্রাফি, মাস্টারবেট করিয়ে নিচ্ছে তারও বেশ সুন্দর ও যুক্তি দিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের স্বপ্নদোষ নিয়েও রয়েছে অজ্ঞতা।
*স্বপ্নদোষ কী?
* কেন হয়?
* কতদিন পর পর হয়?
* স্বপ্নদোষ কি ক্ষতিকর?
এই বিষয়গুলো টপিক আকারে বেশ সুন্দর এবং যুক্তি সহকারে হাদিসের আলোকে লেখা হয়েছে।
শয়তানের বেশ কয়েকটি ফাঁদ আছে ছেলে-মেয়েদের পর্নোগ্রাফি, মাস্টারবেটের দিকে ধাবিত করার। প্রায় বারোটির মতো ফাঁদ আছে এবং এগুলো কী কী ও কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে বেশ সুন্দর করে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যা প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়েকে পড়া এবং জানা অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। ফাঁদ জানলে তা থেকে তবেই না নিজেকে মুক্ত করা যাবে। নিজেকে মুক্ত করতে হলে জানা জরুরি।
* তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যবে…:-
অধ্যায়টি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। আমরা অবসর সময়গুলোতেই জড়িয়ে পড়ি পর্নোগ্রাফির মতো ভয়ংকর নেশায়। ফলশ্রুতিতে হস্তমৈথুন করা বাধ্যতামূলক কর্ম হয়ে পড়ে। এই অধ্যায় জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে অবসর সময়গুলোতে আমাদের কী কী করা উচিত এবং কী কী করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যে যে বিষয়গুলো লেখা হয়েছে তার একটু এদিক সেদিক হলেই দূর্ঘটনা ঘটা খুবই সহজ বিষয়। আমাদের জন্য খুব সুন্দর করে ধাপ ধাপ করে লেখক এই বিষয়গুলো নিয়ে পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা দিয়েছেন। যাতে করে আমরা মুক্ত পেতে পারি এইভ ভয়ানক আসক্তি থেকে। আমাদেরও উচিত বিষয়গুলো জানা এবং পালন করার।
* দু’আ তো করেছিলাম:-
আমরা এমন একটা জাতি যারা অল্পতেই নিজেদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। পূর্বেই বলেছিলাম, আমরা আল্লাহর কাছে ধৈর্য চাই কিন্তু তাও অধৈর্য হয়ে। আমরা দু’আ করি ঠিক কিন্তু তা যেন অধৈর্য হয়ে। আমরা আল্লাহর কাছে ধৈর্য নিয়ে মন থেকে কোনোকিছু চাইলে তিনি আমাদেরকে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান। কিন্তু আমরা নিজেদের ধৈর্য রাখতে পারি না। আমরা নিজেদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। তাছাড়া কীভাবে আল্লাহর কাছে চাইতে হয় তাও জানি না। কীভাবে চাইলে তিনি খুশি হবেন এবং খুশি হয়ে দিয়ে দেবেন তাই আমরা রপ্ত করি না। মুমিনের দু’আই একমাত্র হাতিয়ার। মারাত্মক হাতিয়ার। পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা এই শক্তিটাকেই দিনকে দিন হারিয়ে ফেলছি। আমরা আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। পর্ন/হস্তমৈথুন নামের হাইড্রা দানবকে আপনি একাই চেষ্টা করে পরাজিত করতে পারবেন না। এরজন্য প্রয়োজন হবে আল্লাহর কাছে চাওয়া। এবং তার শক্তি।
‘ আর তোমাদের রব বলেছেন, “ আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের দু’আ কবুল করব। ‘ (সূরা আল-মু’মিন; ৪০:৬০)
এই অধ্যায় লেখা হয়েছে কীভাবে রবের কাছে চাইতে হবে। কিন্তু অধৈর্য হওয়া যাবে না। চেষ্টা এবং দোয়া চেয়ে যেতেই হবে।
সহিহ হাদীসে এসেছে, ‘ বান্দা যখন আল্লাহর কাছে দু’আ করে এবং ফলাফলের জন্য ব্যস্ত হয়ে যায়, বলতে থাকে কখন আল্লাহ্ আমার দু’আর উত্তর দেবেন, কখন আমি আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়টা পাব, তখন তার আর দু’আর জবাব দেয়া হয় না। ‘ ( বুখারি : ৫৯৮১ ; মুসলিম : ৭১১০)
কাজেই দু’আ চেয়ে ধৈর্য হারা হওয়া যাবে না। ধৈর্য ধরে রাখতে হবে। কীভাবে ধৈর্য রাখা যায় তারও বেশ সুন্দর এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে অধ্যায়টি জুড়ে।
* ও যখন পর্ন-আসক্ত:-
তরুণ-তরুণীরা পর্ন আসক্ত হওয়ার পাশাপাশি আজ-কাল বিবাহিতরাও পর্নোগ্রাফিতে মারাত্মকভাবে আসক্ত হয়ে গেছে। যা আসলেও সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। একজন বিবাহিত পুরুষ/স্ত্রী যখন পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ে তখন আর সংসারের ভারসাম্য সুস্থ থাকে না। তখন সংসারে নেমে আসে অশান্তি। ভালোবাসা কমে গিয়ে স্ত্রী/স্বামীর খুঁত ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এই অধ্যায়টি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। একজন স্ত্রী/স্বামী কীভাবে বুঝবে তার সঙ্গিনী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত তা নিয়ে পয়েন্ট আকারে খুব সুন্দর করে লেখা হয়েছে। পয়েন্টগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই বুঝা যাবে সঙ্গিনী কি পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত কি নয়। এবং এই পর্নোগ্রাফির হাতছানি থেকে কীভাবে সঙ্গিনীকে মুক্ত করবে তারও বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে সঙ্গিনীকে পর্নোগ্রাফি থেকে মুক্ত করানো সম্ভব।
এছাড়াও আলোচনা করা হয়েছে আমাদের সমাজের মেয়েরা তার স্বামীদের উপর বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবং কেন ভালোবাসা কমতে থাকে। বেশ সেনসিটিভ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যা প্রত্যেকটি নারীদের জানা উচিত। লেখক সহজে অনুধাবন করার জন্য খুব সুন্দর করে পয়েন্ট আকারে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
* আমাদের সন্তান পর্ন দেখে!!:-
Bangla book mukto bataser khoje pdf download link:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button