বাংলা রচনা বই PDF কালেকশন - Bangla Rochona for class 5, 6,7,8,9,10

মে দিবসের তাৎপর্য রচনা (পয়েন্ট আকারে ৮০০ শব্দ) for All Class

২০০-৩০০, ৫০০, ৮০০, ১০০০ শব্দ পয়েন্ট আকারে মে দিবসের তাৎপর্য রচনা pdf আকারে সম্পূর্ন এখানে পাবেন। আশাকরি, ৫ম, ৬ষ্ঠ, তম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণি ও JSC, SSC, HSC রচনা প্রতিযোগিতায় ভাল ফলাফল পেতে ও বিজয় পেতে এই মে দিবসের তাৎপর্য Bangla Rochona পিডিএফ ডাউনলোড করার মাধ্যমে এই পোস্ট আপনাকে হেল্প করবে।

Contents

মে দিবসের তাৎপর্য রচনা বিস্তারিত

মে দিবসের তাৎপর্য রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

↬ আন্তর্জাতিক মে দিবস ↬ মে দিবসের ইতিহাস

ভূমিকা + বর্ণনা :

‘এমন সময় আসবে যখন কবরের অভ্যন্তরে শায়িত আমাদের নিশ্চুপতা জ্বালাময়ী বক্তৃতার চেয়ে বাঙ্ময় হবে এবং তার শ্রমিকশ্রেণীর বিজয়লাভের শেষ সংগ্রাম পর্যন্ত লড়াইয়ে প্রেরণা যোগাবে এবং শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’  -আগস্ট স্পাইজ ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা কথাগুলো বলেছিলেন। তাঁর সেদিনের সেই ভবিষ্যদ্ববাণী আজ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে প্রমাণিত হয়েছে। ব্যর্থ হয় নি তাঁদের এই আত্মদান। শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে তা এক স্মরণীয় অধ্যায়। ‘মে দিবস’ পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক দিবসে। মে দিবস আজ তাই হাজার হাজার শ্রমিকের পায়ে চলা মিছিলের কথা। ‘একটি মাত্র সৈন্যবাহিনী’ হিসেবে একই পতাকা তলে দাঁড়িয়ে আপসহীন সংগ্রামের কথা। মে দিবস দুনিয়ার শ্রমিকের এক হওয়ার ব্রত। আন্তর্জাতিক সংগ্রাম আর সৌভ্রাতৃত্বের দিন। মে দিবসের অর্থ শ্রমজীবী মানুষের উৎসবের দিন, জাগরণের গান, সংগ্রামে ঐক্য ও গভীর প্রেরণা। মে দিবস শোষণমুক্তির অঙ্গীকার, ধনকুবেরের ত্রাস, সমাজতন্ত্র গড়ার শপথ। মে-রানীর রূপকথা : অথচ এই মে দিবস ছিল একদিন মে-রানীর রুপকথার অন্দরমহলে ঘুমিয়ে। আজকের সংগ্রামী তাৎপর্য ছিল তার অজানা। ইউরোপে দুর্জয় শীতের প্রথম তুষারপাত গলতে শুরু করেছে। গাছে গাছে নতুন পাতা। দিকে দিকে ফুলের বাহার। পাখির গান। মাঠেঘাটে কর্মের জোয়ার। শীতবৃদ্ধ বিদায় নিয়েছে। এসেছে তরুণ বসন্ত। তখনই মে-রানীর ঘুম ভাঙত। ১ মে হত তার উৎসব। রোপণ করা হত ‘মে বৃক্ষ’। তাকে সাজানো হত বিচিত্র পুষ্পহারে। তারপর সেই মে-রানীকে ঘিরে শুরু হত নাচ-গানের উৎসব। কবিরা মে-রানীকে নিয়ে লিখেছেন কবিতা। দেশের রাজারানী-প্রজারাও মেতে উঠতেন উৎসবে। দিন বদলায়। বদলায় সমাজ-ব্যবস্থা। পাল্টে যায় শব্দের অর্থ। মে-রানী একদিন কোথায় হারিয়ে গেল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এসে মে দিবসের অর্থ গেল বদলে। মে দিবস হল কাজের সময় হ্রাস ও মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন। হল দুনিয়ার শ্রমিকদের সংহতি দিবস, পুঁজিবাদী শোষণমুক্তির সংগ্রামী শপথ। শ্রমিকশ্রেণীর আন্দোলন থেকেই উঠে এসেছে এই দিনটি। মে দিবসের নেপথ্য ইতিহাস : আন্দোলনের পথ কখনই মসৃণ ছিল না। মসৃণ থাকে না। ছিল নানা ঘটনার ঘাতপ্রতিঘাতে, জুলুম, অত্যাচারে, প্রতিরোধে ধর্মঘটে, মিছিলে, সংগ্রামী ঐক্যে রক্তলাঞ্ছিত। মে দিবস একদিনে এই আন্তর্জাতিক চেহারা পায় নি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। রয়েছে অনেক রক্তঝরার কাহিনী। জন্মলগ্ন থেকেই শ্রমিকশ্রেণীর ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস। শ্রমিকশ্রেণীকে উদয়াস্ত কাজ করতে হবে। আঠার ঘণ্টা, কুড়ি ঘণ্টা পর্যন্ত ছিল কাজের সময়-সীমা। আলেকজান্ডার ট্রাকটেনবুর্গ মে দিবসের ইতিহাস আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘মে দিবসের জন্মকাহিনী অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে কাজের ঘণ্টা কমাবার আন্দোলনের সঙ্গে।’ ১৮০৬ সালে কারখানায় কুড়ি ঘণ্টা পর্যন্ত ছিল বাধ্যতামূলক কর্মপ্রহর। ১৮২০-১৮৪০ সাল পর্যন্ত দশ ঘণ্টা কাজের দাবিতে অনেক আন্দোলন ও ধর্মঘট হয়। ১৮৬২-৬৩ সালে গড়ে উঠে ট্রেড ইউনিয়নের রাজনৈতিক ভিত্তি। দাসপ্রথা ওঠে গেল। নিগ্রোরা হল শ্বেতাঙ্গদের বন্ধু। এই সময়ে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মালিকরা কম মজুরিতে নারী শ্রমিক নিয়োগ করত। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের পর থেকেই সেখানকার শিল্পের বিকাশ ঘটে দ্রুত তালে। সেই সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলনের প্রসারও ঘটে দ্রুত। ১৮৮১ সালের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার’। সেখানে ১৮৮৪ সালের ৭ অক্টোবরে চতুর্থ সম্মেলনে গ্রহীত হল ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। বলা হয়, ১৮৮৬ সালের ১ মে থেকে আট ঘণ্টাকেই কাজের দিন বলে আইনত গণ্য করতে হবে। ঐতিহাসিক মে দিবসের জন্ম : চলল প্রচার, প্রস্তুতি। অবশ্য ১৮৬৪ সাল থেকেই আট ঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকশ্রেণী ছিল মুখর। দিকে দিকে ‘আট ঘণ্টার শ্রম-সমিতি’ গড়ে উঠতে লাগল। ১৮৬৮ সালে আমেরিকার আইন সভা ‘আট ঘণ্টার কাজ’ বলে একটি আইনও পাস করল। কিন্তু কার্যকরী হল না সেই আইন। কার্ল মার্ক্স স্বাগত জানালেন এই আন্দোলনকে। ১৮৮৫ সালে ব্যাপকতর হল এই আন্দোলন। শুরু হল চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি। ধর্মঘটের পর ধর্মঘট। মিছিলের পর মিছিল। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ল সংগ্রামের ডাক। শ্রমিক শ্রেণী সঙ্কল্পবদ্ধ। ১৮৮৬-র ১ মে থেকে কেউ আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবে না। এল সেই ঐতিহাসিক দিন। ১৮৮৬ সালের ১ মে। পাঁচ লক্ষ শ্রমিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে প্রত্যক্ষভাবে ধর্মঘটে যোগ দিলেন। শাসকদল এই ঐক্যবদ্ধ সুবিশাল শ্রমিক সমাবেশ ও ধর্মঘট দেখে পিছিয়ে গেল। ৩ মে। ম্যাককর্মিক হার্ভেস্টার কারখানায় হল নির্মম পুলিশী আক্রমণ। প্রাণ হারালেন ছ’জন নিরস্ত্র শ্রমিক। এর পরের দিন। ৪ মে। হে মার্কেট স্কোয়ার। সুবিশাল প্রতিবাদ সভা। পুলিশ গুলি চালাল। শহীরে রক্তে রঞ্জিত হল হাতের নিশান। গ্রেপ্তার করা হল চারজন শ্রমিক নেতাকে। বিচারের নামে হল বিচারের প্রহসন। জারি হল ফাঁসির আদেশ। এঁরা হলেন আগস্ট স্পাইজ, পার্সনস, ফিসার ও এঞ্চেল। প্রতিবাদের ঝড় উঠল। সভা শোভাযাত্রায় ধিক্কারবাণী উচ্চারিত হল। ধ্বনিত হল শ্রমিকশ্রেণীর সংগ্রামের কণ্ঠ। প্রতিবাদ জানালেন জর্জ বার্নাড শ, মার্ক্সের কন্যা এলনর মার্ক্স। দেশকালের গণ্ডি পেরিয়ে এই নৃশংস বর্বরতার খবর পৌঁছল দুনিয়ার মেহনতী শ্রমজীবীর কানে। ১৮৮৯ সালে ১৪ জুলাই। ফরাসী বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল প্যারিস। বাস্তিল পতনের শতবার্ষিকী। এই দিনেই প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের সম্মেলন। প্রথম দিনের অধিবেশনেই সর্বসম্মত প্রস্তাব ১৮৯০ সাল থেকে ১ মে প্রতিবছর শ্রমিকশ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতি, সৌভ্রাত্র ও সংগ্রামের দিন বলে ঘোষিত হল। এভাবেই ১৮৮৬ সালের ঐতিহাসিক মে দিবস রূপান্তরিত হয় ১৮৯০ সালের আন্তর্জাতিক মে দিবসে। দেশে দেশে মে দিবস : প্যারিস সম্মেলনে ঘোষণার পর থেকেই দেশে মে দিবস পালিত হয়। ১৮৯০ সালে গ্রেট ব্রিটেনে ১ মে’র পরিবর্তে ৪ মে হাইড পার্কে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে প্রথম আন্তর্জাতিক মে-দিবস উদযাপিত হয়। আমেরিকায় ১৮৯০ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক মে দিবস পালিত হয় আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের মাধ্যমে। ফ্রান্সে মিছিল ও সমাবেশের মধ্যে অনুষ্ঠানিকভাবে মে-ডে পালিত হয় ১৮৯০ সালে। জার শাসিত রাশিয়ায় ১৮৯৬ সালে মে দিবস উদযাপিত হয় ধর্মঘটের ভেতর দিয়ে। চীনে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯২৪ সালে। ডা. সান্ ইয়াৎ সেন ওই সমাবেশে ভাষণ দেন। হিটলারের উত্থানের শুরুতে ১৯৩৩ সালে জার্মানিতে কমিউনিস্টরা বেআইনী মে দিবস উদযাপন করেছিলেন। আজ এশিয়া-আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ল্যাটিন আমেরিকা, ছোট বড় সমস্ত দেশ জুড়ে মে দিবস পালিত হচ্ছে। মে দিবসের তাৎপর্য : মে দিবস হল দুনিয়ার মেহনতী মানুষের সঙ্কল্প গ্রহণের দিন। এই সঙ্কল্প হল সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শ্রেণীবৈষম্যের বিলোপসাধন। পুঁজিবাদী দাসত্বশৃঙ্খল থেকে মুক্তির দৃঢ় অঙ্গীকার। মে দিবস শ্রমিকশ্রেণীর চিন্তা-চেতনায় এনেছে এক বৈপ্লবিক তাৎপর্য। লেনিন মে দিবসকে ব্যবহার করেছিলেন শ্রমিকশ্রেণীর বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের বলিষ্ঠ হাতিয়ার হিসেবে। তারই সার্থক পরিণতি ১৯১৭ সালের নভেম্বর বিপ্লবে। মে দিবস দুনিয়া জুড়ে শ্রমিক আন্দোলন ও মুক্তি সংগ্রামের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ, ‍দুনিয়ার শ্রমিক এক হওয়ার উজ্জীবন মন্ত্র।

উপসংহার :

১৯৮৬ সালে ঐতিহাসিক মে দিবসের শতবর্ষ শেষ হয়েছে। মে দিবসের এই দীর্ঘ শতবর্ষের আলোয় অনেক অন্ধকার দূর হয়েছে। সংগ্রামী শ্রেণীর সামনে উন্মোচিত হয়েছে নতুন দিগন্ত। দৃঢ় হয়েছে শ্রমিক সংহতি। বিশ্বের এক- তৃতীয়াংশ মানুষ আজ রয়েছে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। কিন্তু এখনও জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ পুঁজিবাদী দাসত্ব থেকে মুক্ত নয়। মুক্ত নয় সামন্ততান্ত্রিক শোষণ থেকে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আজও প্রবল, পরাক্রান্ত। এখনও তার নির্লজ্জ রণ-হুংকার থামে নি। তাই দুনিয়া জুড়ে মে দিবসের যে বিজয় অভিযান সেখানে মূর্ত হয়ে উঠেছে সমাজতান্ত্রের সপক্ষে ও পুঁজিবাদ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণীর বৈপ্লবিক সংগ্রাম। এই সংগ্রামী চেতনা ও চরিত্রই শ্রমজীবীর ভূষণ। মে দিবস আজ আর শ্রমিকের কাজের ঘণ্টা কামানো দাবির আন্দোলন নয়। মে দিবস আজ দুনিয়ার মেহনতী মানুষের সংগ্রামের দিন, সৌভ্রাতৃত্বের দিন। সমাজতন্ত্র কায়েম করার শপথ গ্রহণের দিন। মে দিবস এখন শ্রমিকশ্রেণীর সামনে নতুন ঊষার স্বর্ণ দুয়ার। অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া দুর্লভ এক সম্পদ।
মে দিবসের তাৎপর্য রচনা pdf

মে দিবসের তাৎপর্য pdf download করুন

  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা/অনুচ্ছেদের নামঃ মে দিবসের তাৎপর্য,
  • ফাইল ফরম্যাটঃ pdf download(পিডিএফ ডাঊনলোড),
  • ক্যাটাগরিঃ Bangla Rochona pdf(Rachona),
  • ধরুন- পয়েন্ট আকারে রচনা,
  • Total word: 200, 300, 400, 500, 800, 1000, 1500 শব্দ,
  • ক্লাসঃ class 6, 7, 8 ,9 10, 11, 12,
  • Psc(প্রাইমারি স্কুল), JSC(হাই স্কুল), SSC(এস এস সি), HSC(এইচ এস সি), fazil(ফাজিল), kamil(কামিল) hons, degree
এই বাংলা রচনার pdf পেতে এখানে দেখতে পারেন।


FAQ About মে দিবসের তাৎপর্য

Question1: রচনাটির কেমন?
Answer1: মে দিবসের তাৎপর্য রচনাটি পড়লে SSC,HSC ছাত্র যেকারো অনেক জ্ঞান বাড়বে।


Question2: মে দিবসের তাৎপর্য এর পিডিএফ কি এখানে পাওয়া যাবে?

Answer2: জি, মে দিবসের তাৎপর্য রচনাটি PDF সহ সম্পুর্ন এখানে পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button