বই রিভিউ ও ডাউনলোড
গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি বই Pdf download (All)
Math olympiad bangla books pdf download. Bdmo গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি বই pdf download link:
আরও পড়ুনঃ
বইয়ের নামঃ স্বপ্নপোকা।
‘স্বপ্নপোকা’ লেখক Ahmed Faruq এর একটি অনন্য সৃষ্টি। আধোজাগতিক বিষয়ের প্রতি আগ্রহী হয়েই লেখক এই উপন্যাসটি লিখেছেন। লেখক বলেন, ‘আধো জাগতিক বিষয়টি যত সহজ মনে হয়, আসলে তত সহজ নয়।’
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ইবু। যার ভেতর আমি হুমায়ুন আহমেদের হিমুকে খোঁজে পাই। এটা পাঠক হিসেবে মনে হওয়ার অনেক কারণ আছে। গল্পের ভেতরে ঢুকতে পারলে যে কেউ হিমুর উপস্থিতি টের পাবেন।
মিরোভা নামের মেয়েটি ইবুকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসে। ইবু বিষয়টা জানতো কিন্তু মিরোভা যে ইবুকে এতটা ভালোবাসে তা সে জানতো না। মিরোভা জ্বরের ঘোরে ইবুকে যেসব কথা বলেছে, তাতে ইবু সত্যি মনে মনে মুগ্ধ।
মিরোভার বাবাকে ইবুর প্রথমদিকে পাতিকাক মনে হলেও মিরোভার পাবদা মাছ খাওয়ার বিষয়টা তিনি কিভাবে জানলেন, সেটা ভেবে ইবু সত্যি অবাক। এটা তো মিরোভা, ইবু আর বড় বোন শোভানার সামনে বিড়বিড় করে
বলেছিলো, এবং তিনি তখন বাসায় ছিলেন না। তখন ইবু মনে মনে ভাবে, হয়তো সব বাবা মা’ই সন্তানের মনের কথা বুঝতে পারেন, তিনিও মিরোভার মনের কথা বুঝতে পেরে মেয়ের জন্য পাবদা মাছ কিনতে গিয়েছিলেন এই ঝড়ের রাতে। এখানে একজন স্নেহময়ী বাবার পরিচয় পাই, এবং অজান্তেই কিছু কোমল হৃদয়ের পাঠকের কাছে মিরোভার কর্কশ কণ্ঠের সেই বাবা হয়ে উঠবেন অসাধারণ একজন বাবা, কারো চোখের কোণও হয়তো ভিজে যেতে পারে, আমার মতো।
আধো জাগতিক বিষয়টি ইবু ঠিক বিশ্বাস করতো না, কিন্তু ঘুমালেই সে নিজের পরিচয় হারিয়ে হয়ে যেতো অজপাড়াগাঁয়ের এক গৃহবধূ সেলিনা। যার স্বামী দেলোয়ার প্রায়ই তাকে মারধর করে। ইবু ঘুমের ভেতরই মারের চোটে ‘উহ উহ’ শব্দ করে। ইবু প্রায়ই এই স্বপ্ন দেখে আর সেটা ধারাবাহিকভাবে দেখে, যেনো কোনো ধারাবাহিক নাটক। বন্ধু নেহালকে বিষয়টি জানালে প্রথমদিকে সে হালকাভাবে নিলেও এখন সে-ও ইবুর এই ধারাবাহিক স্বপ্ন নিয়ে চিন্তিত।
ইবুর মাথায় একটাই বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটা হলো, একই মানুষের দুটি ভিন্ন সত্তা হতে পারে কি করে? আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের মনে, একই বস্তু পদার্থ অথবা শক্তি হিসেবে থাকতে পারে,তবে একই সময়ে নয়। ইবুর তখনই পুনর্জন্মের কথা মনে পড়ে কিন্তু পুনর্জন্ম নিয়ে বিজ্ঞান নিশ্চিত কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের যত প্রশ্ন pdf download:
একদিন ইবু আর মিরোভা নৌকার ভেতর ছিলো, হঠাৎ মিরোভা লক্ষ্য করলো ইবু কাঁপছে, এবং বলতে লাগলো, ‘আমারে কুনু কালোজিনে ধরে নাই, আমি গোবর খামু না।’ মিরোভা জানতে চাইলো আবার সেই ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছিলো কিনা। অভয় দিলো, ইবু শুয়ে পড়লো। মিরোভা দেখলো ইবুর সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আছে, নিঃশ্বাসও বোঝা যাচ্ছে না, মনে হচ্ছে বরফের মূর্তি, মৃত মানুষের মতো, নড়াচড়াও নাই। মিরোভার শরীর কাঁপছে। হ্যা ইবু আবারও সেই স্বপ্নের জগতে চলে গেছে, হয়ে গেছে নির্যাতিতা সেলিনা।
উপন্যাসের শেষটা বেশ রোমাঞ্চকর। দেখা যায়, ইবু স্বপ্নের জগতে দেখে, তার অবস্থা খুব খারাপ, সেই জগতে তার স্বামী মানে সেলিনার স্বামী তার ভুত তাড়ানোর জন্য ওঝা নিয়ে এসেছে, তাকে দড়ি দিয়ে বেধে গোবর খাইয়েছে। ইবু সেখানে যেতে চায় এবং সেলিনাকে বাঁচাতে চায়। বন্ধু নেহাল, মিরোভা, মিরোভার বোন শোভানাসহ চললো সেই স্বপ্নের জগতের সেলিনার বাড়ি। অনেক খোঁজাখুজির পর পেয়ে গেছে সেই কাঙ্খিত বাড়ি।
স্বপ্নের জগতের সেমিনার সেই বাড়িতে এসে ইবু অবাক হয়, স্বপ্নের বাড়ি আর বাস্তবের এই বাড়ির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সে খুব অস্বস্তিবোধ করছিলো, যদি সত্যি সত্যি বাড়ির ভেতর থেকে তার দ্বিতীয় সত্তা সেলিনা বের হয়ে আসে, তখন সে কি করবে!
বাড়ির ভেতর থেকে যিনি বের হয়ে এলেন, তিনি সেলিনার ননদ, যার বয়স থাকার কথা আঠারো কিংবা বিশ, কিন্তু যাকে দেখছে তার বয়স চল্লিশ – পয়তাল্লিশ। তিনি জানালেন, সেলিনা প্রায় বিশ- পঁচিশ বছর আগে ওঝার মারের ধকল সহ্য করতে না পেরে মারা গেছে। ইবু সেলিনার কবরের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকে, পৃথিবীটা এত বিচিত্র কেনো, তবে কি জগতে কেবল এক বিচিত্র রহস্যের বেড়াজাল!
ইবু মিরোভার হাত ধরে হাঁটছে, কেনো হাঁটছে তারা কেউ জানেনা।
উপন্যাসের সমাপ্তিটা অসাধারণ। তরুণ লেখক এখানে বেশ মুন্সিয়ানা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।
অসম্ভব সুন্দর একটা উপন্যাস ‘স্বপ্নপোকা’, যারা এখনও বইটি পড়েননি, অনুরোধ করছি বইটি পড়ার। ভালো লাগবে আশা করছি সব বয়সী বইপোকাদের কাছে।