বই রিভিউ ও ডাউনলোড
ঢাকার ইতিকথা বই রিভিউ

Book | ঢাকার ইতিকথা (প্রথম খণ্ড) |
Author | সাদ উর রহমান |
Publisher | ঐতিহ্য |
ISBN | 9789847764870 |
Edition | 1st Published, 2019 |
Number of Pages | 96 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
ঢাকা, আমাদের প্রাণের শহর ঢাকা। মসজিদের শহর ঢাকা, আবার যান্ত্রিকতার শহরও ঢাকা। তবে এই শহরের একটা মায়া রয়েছে। যাতে সহজেই আটকে যায় সবাই। কিন্তু এর একটা অনেক বড় ইতিহাসও রয়েছে। সংগ্রামের ইতিহাস, হাস্যরসের ইতিহাস। সব কিছু মিলিয়ে ঢাকা আসলে আমাদের চেনা আবার অচেনার একটি শহর।
.
ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত সাদ উর রহমান এর “ঢাকার
ইতিকথা (প্রথম খন্ড)” বইটি পড়লাম। এতে সেই সময়ের ঢাকার কিছুটা বর্নণা পাওয়া যায়। তখনকার লোকজন এবং সামাজিক অবস্থার একটা বর্নণা পাওয়া যায়। মুলত এখন আমরা যাকে পুরান ঢাকা বলি সেখানকার কথাই বেশি বলা হয়েছে। তখনকার দিনের মানুষের কথা যাদের কথা আজ আমরা সাধারণত ভুলতে বসেছি সেই মানুষ গুলোর কথা এখানে বলা হয়েছে।
.
তবে এতে ঢাকার বর্নণার চেয়ে সেখানে বসবাসরত কিছু মানুষের কথাই এসেছে। এখন বইটির নাম যেহেতু “ঢাকার ইতিকথা” সেক্ষেত্রে এখানে ঢাকার বর্নণা তেমন নেই। বইটিতে সেই সময়ে ঢাকার কয়েকজন মানুষের কথা উঠে এসেছে এবং তার সাথে পারিপার্শ্বিক অবস্থার বর্নণা এসেছে।
.
বইটিতে একেবারেই ব্যক্তি কেন্দ্রিক তা নয়। যেমন এখানে ঢাকার প্রথম মোটর শো এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মুড়ির টিন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
.
সেটাই বলি –
মুড়ির টিন নামটি আসলে ঢাকায় বাস চলাচলের পর থেকে শুরু হয়েছি। মুড়ির টিন তাহলে আসল কিভাবে? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ঢাকায় মিত্রবাহিনী বিশেষ ভাবে মার্কিনিরা তাদের অনেক ট্রাক ও গাড়ি বিক্রি করে চলে যায়। তখন ঢাকায় পরিবহন ব্যবসায় নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। অনেক সেই সব ট্রাক গাড়ি ক্রয় করে। সেগুলোর বডি পরিবর্তন করে কাঠের বডির সাথে টিন জুড়ে দেয়। এরপর থেকেই এর নাম হয়ে যায় মুড়ির টিন।
.
আবার বইটি শুরুতেই আমাকে একটি তথ্য দিয়েছে যেটা একটু হলেও সমস্যার মধ্যে ফেলেছিল। সেটা হচ্ছে সিটি বাকল্যান্ড কে নিয়ে। যেখানে লেখা হয়েছে সিটি বাকল্যান্ড ঢাকায় বিভাগীয় কমিশনার হয়ে আসেন ১৯৬৪ সালে। যেটা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ বৃটিশ শাসন ৪৭ সালেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এটা হবে ১৮৬৪। তারপর বুঝতে পারলাম আসলে এটা টাইপিং নয়ত প্রিন্টিং এ ভুল হয়েছে।
.
তবে পাঠক শুরুতেই এধরনের তথ্যগত ভুল পেলে ধারণাটা একটু অন্যরক হতে পারে। সেজন্য বইটি আবার ভাল ভাবে প্রুফ রিড করা প্রয়োজন। কারণ যেহেতু ইতিহাস, তাই তার তথ্যগত ভুল গুলো মানুষের কাছে পৌছে গেলে সেটা তাদের মধ্যে একটা দ্বন্দের সৃষ্টি করবে। তখন কোনটি সঠিক কোনটি ভুল সেটার নির্ণয় করা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে।
.
তবে ছোট বই হিসেবে আমাকে একটু হলেও হতাশ করেছে কারণ এখানে ব্যক্তি আলোচনা এসেছে। যেহেতু ঢাকার ইতিকথা তাই ব্যক্তি আলোচনা বেশি না করে ঢাকার আলোচনা বেশি হলে ভাল হতো। দ্বিতীয় খন্ডটি কাছে নেই, তবে এটাও পড়ব। ধন্যবাদ।