ভাব সম্প্রসারণ: ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তােলে মহাদেশ সাগর অতল
ভাব সম্প্রসারণ এর নামঃ
মূলভাব: ক্ষুদ্র থেকেই বৃহতের সৃষ্টি। জগতের সকল বিশাল ও মহৎ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে ক্ষুদ্রের অবদান। তাই ক্ষুদ্রকে তুচ্ছ বা অবহেলা করা ঠিক নয়।
সম্প্রসারিত ভাব: ক্ষুদ্রই বৃহতের সম্ভাবনা ধারণ করে। পৃথিবীর বহু ক্ষুদ্রের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় বৃহৎ। আপাতদৃষ্টিতে আমরা সাধারণত একটি ক্ষুদ্র, বালিকণা বা এক বিন্দু পানির কোন গুরুত্ব দেই না। কিন্তু বহু বছর ধরে কোটি কোটি বালুকণা প্রতি মুহূর্তে সঞ্চিত হয়ে বিশাল ভূভাগ গড়ে তােলে, যে ভূভাগে একদিন জনবসতি গড়ে উঠে ও পরে ক্রমান্বয়ে তা শহর- বন্দরে রূপ লাভ করে। ঠিক তদ্রুপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলবিন্দুর সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় সাগর বা মহাসাগর। ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কে বলেছেন – “সরল এবং ছােট প্রাণীগুলাে থেকে জটিল ও বড় প্রাণীর উৎপত্তি ঘটেছে।” অর্থাৎ আদি পৃথিবীর এককোষী অ্যামিবা থেকেই ক্রমশ বহুকোষী হাজারাে প্রাণীর উৎপত্তি ঘটেছে। একইভাবে প্রতিটি ক্ষুদ্র মুহূর্তের মিলনে গড়ে উঠে অনন্তকাল, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোষ-ত্রুটির সমন্বয়ে একদিন পৃথিবীতে মানবজীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ; অথচ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মহৎ কাজের সমন্বয়েও একদিন পৃথিবীকে স্বর্ণময় করে গড়ে তােলা সম্ভব। সুতরাং প্রতিটি ক্ষুদ্রের রয়েছে অপরিসীম তাৎপর্য।
মন্তব্য: শত সহস্র ক্ষুদ্রের সমন্বয়েই আমাদের প্রাত্যহিক জীবন। এসব ক্ষুদ্রকে অবহেলা করে আমরা আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জ্ঞান, দয়া, মমতা, প্রচেষ্টা প্রভৃতির সমন্বয়ে জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে পারি।