বই রিভিউ ও ডাউনলোড

লজ্জা Pdf Download তসলিমা নাসরিন – Lajja Taslima Nasrin pdf

বুক রিভিউ(শাহারিয়া আক্তার)
বই : লজ্জা pdf
লেখক: তসলিমা নাসরিন
তারিখ : ১৯৯৩

১৯৯৩ সালে প্রকাশের পরপরই নাকি তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’ গ্রন্থখানি অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়ে ওঠে দেশব্যাপী,এবং ওই আলোচান ও সমালোচনার ফলেই সবচেয়ে বেশি পঠিত হয়েছিল “লজ্জা” বইটি তখনকার সময় অবশ্য এটা শোনা কথা জানিনা কি হইছে তা জানার কোন সুযোগ আমার হয়নি কারণ জন্মই হয়নি ওই সময় আমার। জন্ম হলেও বলতে পারতাম না কারন একটা ছোট নবজাতক আমি তখন।তাই জোর দিয়েও বলতে পারছিনা কি ঘটেছিলো 🙂।

বইটি গতকালই পড়ে শেষ করলাম অথচ এই বইটা আমার কাছে আছে প্রায় ছয় বছর হলো, অলস হলে যা হয় আরকি 😁।

বইটা আমার জন্মের আগের ঘটনা নিয়ে লেখা সো মতামত দিতে পারছিনা বিচক্ষণতার সাথে। তবে উপন্যাস বলতে নারাজ আমি,কারণ উপন্যাস বলতে আমি বুঝি একটু রংচং মাখানো কিছু যা পড়তে পড়তে একটু প্রেম,আবেগের কল্পনা করবো কিন্তু “লজ্জা” বইটি তথ্যবহুল ও বাস্তব রূপের প্রকাশ এটাকে উপন্যাস বলা যায় কি না জানিনা।

১৯৯২ সালে ভারতের বাবরি মসজিদ আক্রান্ত হলে বাংলাদেশের দেশের প্রায় সব ক’টি দৈনিকের নাকি শিরোনাম হয় এই সংবাদটি। এরপরই বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কতিপয় সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীরা তাদেরকে মারধর করে এবং ঘরবাড়ি ও মন্দির ভাঙচুর করা শুরু করে অনেকেই বিষয়টিকে দাঙ্গা হিসেবে আখ্যায়িত করতে চান। কিন্তু দাঙ্গা হলে তো উভয় পক্ষেরই ক্ষতি হবার কথা। মুসলমানদের ঘরবাড়ি অথবা উপাসনালয় আক্রান্ত হবার কোনা সংবাদ পাওয়া যায়নি বাংলাদেশে।

সুকুমার দত্তের ছেলে ডা.সুধাময় দত্ত বাপ-দাদার ভিটে-মাটি কামড়ে পড়েছিল যাকে সাতচল্লিশে, ষাটে, ছেষট্টিতে, একাত্তরে, নব্বইয়েও দেশ ত্যাগ করায়ে ভারতে নেওয়া যায় নাই সেই সুধাময় প্যারালাইজড শরীর নিয়ে ছেলের সঙ্গে দেশ ত্যাগ করতে রাজি হয়ে যায়। সুধাময় স্ত্রী কিরণময়ী তাঁদের দুই সন্তান সুরঞ্জন ও মায়া। মায়া ২১ বছরের এক তরুণী যার বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছে যে বেঁচে থাকার জন্য দাদাকে সেই ১৯৯২ এর দাঙ্গার সময় বলে এক নিরাপদ আশ্রয়ে যাতে তাঁদের সকলকে নিয়ে যায় । সুরঞ্জন এক টগবগে যুবক যার শিরায় শিরায় দেশপ্রেম, সাম্প্রদায়িকতা। যার হিন্দু বন্ধুর চেয়ে মুসলমান বন্ধুর সংখ্যা ও তাদের সাথে সখ্যতা দারুণ, একপাতে বসে গরুর ভুনা গোসত খেতেও দ্বিধাবোধ করে না। যে সুরঞ্জন নিজেকে “মানুষ “ভাবতো তাঁকে কেন “হিন্দু” ভাবতে বাধ্য করা হয়, সুরঞ্জন কেন রাস্তা থেকে এক মুসলিম পতিতাকে ধরে নিয়ে এসে ধর্ষণ করতে চায়! কেন এবং কিসের জন্য? সুরঞ্জনের সাথে এমন কি ঘটে যার জন্য সে তাঁর বাবা সুধায়ম কে বলেন চলো দেশ ত্যাগ করে চলে যাই।
এসব নিয়ে “লজ্জা”।

বই পড়ে অভিমত এটা” লজ্জা ” নামের সার্থকতা লেখিকা সম্পূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে লেখিকার সব Approach ভালো লাগেনাই। কিছুক্ষেত্রে মনে হয়েছে লেখিকা আবেগে, আক্রোশ একটু বেশি ঢেলে সাজিয়েছে।
সুরঞ্জনকে দিয়ে “শালা শুয়োরের বাচ্চা বাংলাদেশ ” বলানোটা পছন্দ হয়নি।
তবে বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা নষ্ট হয়ে গেলে সম্পর্ক ও আবেগ কিভাবে নষ্ট হয় তা ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা খুবি সুন্দরভাবে।
আমার কাছে “লজ্জা” বইটি তাঁর লেখা অন্য সকল বইয়ের চেয়ে আলাদা তবে ধর্মের প্রতি আক্রোশ তাঁর সকল বইয়ে একি রকম তা ঠিকঠাক ছিল।
সম্পূর্ণ জানতে হলে বইটি অবশ্যই পড়া উচিৎ কেননা খুব বিস্তর আলাপের মাধ্যমে তসলিমা নাসরিন বইটি লিখছেন। তবে মৌলবাদীদের এই বই মোটেও ভালো লাগবেনা এটা লিখে দিয়ে বলা যায়।
কিছু কিছু জাগয়া বাদ দিলে বইটি আমার কাছে যথাযোগ্য মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।
নিজের মতামত তুলে ধরতে চাইলে ও আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করতে চাইলে বইটি অবশ্যই পড়া উচিৎ।

বিঃদ্রঃ বইটা নিষিদ্ধ বই এদেশে😓

lojja by taslima nasrin books pdf link: Pdf Download

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button