বই রিভিউ ও ডাউনলোড

অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী বই রিভিউ

#rokomari_book_club_review_competition

উপন্যাসঃ- “অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী”
লেখকঃ- আহমদ ছফা
প্রথম প্রকাশঃ- ১৯৯৬ ইং
মূল্যঃ- ১৫০ টাকা

আহমদ ছফার আত্মজৈবনিক প্রেমের উপন্যাস “অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী” তিনি এতে তিন জন রমণীর সৌন্দর্য এবং তাদের ব্যবহার, খোব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন…. প্রারম্ভিকার ওভার ডোজ দর্শন শাস্ত্রের ওজনে যখন খানিকটা উৎপীড়নের উদ্রেক রটতে শুরু হয়েছিল ঠিক সেই মুহূর্তেই কালবৈশাখী ঝড়ের মতো ঝড়ো হাওয়ায় শাড়ির পাড় উড়িয়ে দুরদানা আফরাসিয়াবের প্রবেশ ঘটে মঞ্চে……
আহমদ ছফা , দুরদানা চরিত্রটাকে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যেন পৃথিবীতে এমন সুন্দর রূপবতী তরুণী পাওয়া বড্ড মুশকিল…..

ষাট-সত্তর দশকের সময়ে ঊনিশ বছরের এমন একজন তরুণী ঢাকা শহরের রাস্তায় নিরদ্বিধায় সাইকেল চালিয়ে কলেজে আসা যাওয়া করছে এ ব্যাপারটা ভাবতে ও শরীরে শিহরণ উদ্রেক হয়…… অথচ যেই সময়ে নারীরা ঘরের বাইরে দু- কিলোমিটার দূরের আলোকরশ্মি চোক্ষে দেখতে ও ভয় পেতো সেই যায়গায় দুরদানা অনায়াসে লোক জনের ভ্রু-কুঁচকানো কে উপেক্ষা করে সাইকেল দিয়ে সারা সহরের অলি-গলি ঘুরে বেড়াতো…….. ছোট ছোট শিশুরা তাকে হাতে তালি দিয়ে আমন্ত্রন জানাতো, আর দুরদানা তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করাতে হাত দুটি উপরের দিকে দিয়ে না ধরে সাইকেল চালিয়ে তাদের চমকে দিত! …..

কল্পিত নামের আড়ালে একটা চমকপ্রদ ঘটনা থেকে ই যায়…… উপন্যাসটা ছফার আত্মজীবনী নিয়ে লিখা….
তবে ধরে নিতে হয় যে কল্পিত নামের আড়ালে লুকায়ীত চরিত্র দুরদানার অস্তিত্ব অভিকর্ষজ বলের মতো ই ধ্রুব সত্য……..
আহমদ ছফা সম্পর্কে একটু ঘাটাঘাটি করার পর যেন বিষয়টা আরেকটু স্পষ্ট হলো….. জানতে পারলাম যে টিএসসি মোড়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য ” স্বোপার্জিত স্বাধীনতা”র কারুশিল্পী শামীম শিকদারই আহমদ ছফার সেই দুরদানা আফরাসিয়াব চরিত্র……. তিনি ছিলেন ছফা সাহেবের প্রথম প্রেমিকা….. তিনি আরোও দুই রমণীর কথা উল্লেখ করলেও দুরদানার মতো দুর্দান্ত ভাবে প্রকাশ করেন নি…..
পার্থিব সৌন্দর্যের বিচার করতে গেলে শমারোখ ছিলেন অদ্বিতীয়…… দুরদানার পরপর ই তার আগমন….. শমারোখ ছিলেন প্রতিভাবান একজন সুন্দরী রমণী…… যার সৌন্দর্যের বিবরন আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে দেওয়া সামান্য কষ্টকর……. ছফা সাহেব খোব সুন্দর ভাবে উত্থাপন করেছেন….

পাঠশেষে খানিকটা হতাশ হয়েছি…..যে সোহিনীকে উদ্দেশ্য করে লেখক এতো সময় জুড়ে দুরদানা আর শামারোখের কাহিনী বর্ণনা করেছেন সেই সোহিনীর পরিচয় অস্পষ্টই থেকে গেল….. দ্বিতীয় খন্ড লিখবেন ভেবেই সম্ভবত ছফা সাহেব এই বইয়ের অসমাপ্ত ইতি টেনেছিলেন….. অথচ ছফা সাহেব মরে গিগেই আরেকটা উপন্যাস হয়ে রইলেন ……. তার দুঃখ কষ্ট গুলো যেন আজ নিজের শরীরে বহন করে ঘুরে বেড়াচ্ছি…….

✍️ Shahid Bin Nur

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button