জিয়াউর রহমানের জীবনী
আজকে আমরা মেজর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবনী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব.(Ziaur Rahman biography in bangla)
ভূমিকা : পৃথিবীতে যাদের চরিত্র ও আদর্শের প্রভাব জাতির প্রাণে প্রেরণা যুগিয়েছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একজন বীর মুক্তিযােদ্ধা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। তিনি ‘বীর উত্তম খেতাব লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বালাদেশের প্রেসিডেন্ট পদ লাভ করেন।
জন্ম ও বংশ পরিচয়: জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বগুড়া জেলার বাগবাড়ি তার পিতৃভূমি। জিয়াউর রহমানের ছেলেবেলার নাম ছিল কমল। কমলের দাদা ছিলেন শিক্ষিত ও অত্যন্ত ধার্মিক ব্যক্তি। কমলের পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মাতার নাম জাহানারা খাতুন।
শিক্ষা জীবন : কলকাতায় হেয়ার স্কুলের ছাত্র ছিলেন জিয়াউর রহমান। ১০/১১ বছর পর্যন্ত ঐ স্কুলেই পড়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কলকাতায় জাপানি বােমা পড়ার বছর তারা গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন এবং গ্রামের স্কুলে ছ’বছর পড়াশুনা করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ-বিভাগের পরই মনসুর রহমান করাচিতে চলে যান। কমলের ইচ্ছে ছিল ডাক্তারী। পড়ার। কিন্তু মেট্রিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ডাক্তারী পড়ার ইচ্ছা বাদ দিয়ে সেনাবাহিনীতে যােগ দেন।
কর্মজীবন : ১৯৬৩ সালে তিনি সামরিক গােয়েন্দা বিভাগে যােগ দেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় জিয়াউর দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ানের সেকেণ্ড-ইন-কমাণ্ড নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৭০ সালে ঈস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্যাটেলিয়ানের। রহমান ছিলেন বিখ্যাত আলফা ব্যাটেলিয়ানের কোম্পানি কমাণ্ডার। ১৯৬৬ সালের এপ্রিল মাসে ঈস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেণ্ড-ইন-কমাণ্ড নিযুক্ত হন। ১৯৭০ সালে তিনি চট্টগ্রামে বদলি হন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার। কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘােষণা দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কিছুদিন এক নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। এর পর ছিলেন ‘জেড’ ফোর্সের অধিনায়ক। ১৯৭৬ সালে তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ও পরে। গণভােটের মাধ্যমে দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি.এন.পি) গঠন করেন। পৃথিবীর ৩৩টি বেশি দেশে তিনি রাষ্ট্রীয় সফর করেন। দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশ নিয়ে সার্ক গঠন করেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন গ্রাম ও গ্রামের মানুষকে। তিনি নিজেও বাংলার গ্রামে ঘুরেছেন, খাল খনন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছেন। যনির্ভর অর্থনীতি, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও দেশবাসীর জীবনের মানােন্নয়ন এসবই ছিল তার কর্মসূচীর লক্ষ্য।
বিবাহ জীবন: ১৯৬০ সালে তিনি বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম খালেদা বেগম (সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া)। জিয়ার দুটি সন্তান। তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান।
উপসংহারঃ প্রেসিডেন্ট জিয়া ছিলেন একজন মহান নেতা। তার প্রতিবাদ, সাহসিকতা, উদার মানবতা আমাদের জাতীয় জীবনের পাথেয়স্বরূপ। প্রেসিডেন্ট জিয়া আদর্শ নিঃস্বার্থ মানুষ। দেশ ও জাতির উন্নতির জন্যে তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে কয়েকজন উচ্চাভিলাসী বর্বর সামরিক সদস্যের হাতে তিনি নির্মমভাবে নিহত হন।