বই রিভিউ ও ডাউনলোড
নয়া চীন ভ্রমণ Pdf download
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা অনেকগুলো বইয়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে নয়া চীন ভ্রমণ Pdf download এখানে দেওয়া হলো. আমরা চেষ্টা করব সব ধরনের বইয়ের লিংক এর মত এই বইটির পিডিএফ আপনাদের কাছে সরবরাহ করতে। তো বন্ধুরা শুরু করা যাক।
আরো পড়ুন-
ইঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী
লেখকঃ শেখ মুজিবুর রহমান
আমার দেখা নয়া চীন মূল্যঃ
শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী বইটা শুধুমাত্র আত্মজীবনি বই’ই না। এ বইটির অবদান বহুমাত্রিক। এ বইটি ১৯৩৮-৩৯ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশে রাজনৈতিক ঘটনাবলির এক অনবদ্য দলিল। একজন সাধারণ মানুষ থেকে পূর্ব বাংলার মুক্তিকামী মানুষ হয়ে ওঠার গল্প এর প্রতিটি পাতায়। পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ। সহজ-সরল ভাষায় তিনি তার স্মৃতির রাজ্য খুলে দিয়ে যে ঘটনা প্রবাহের বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন তা থেকে একজন পাঠক খুব সহজেই শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হওয়ার ইতিহাস জানতে পারবে।
কংগ্রেস থাকতে মুসলিম লীগ কেন? মুসলিম লীগ থাকতে আওয়ামী মুসলিম লীগ কেন? কোন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটা বাদ দেওয়া হলো? অথবা পাকিস্তান আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী হয়েও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর লেখক কেন সেই পাকিস্তানের বিপক্ষেই সংগ্রাম করেছেন?
এসব ঘটনাপ্রবাহের অবিচ্ছেদ্য অংশীদার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার আত্মজীবনী গ্রন্থে প্রশ্নগুলোর উত্তর টেনেছেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকাকালে ১৯৬৭ সালের দ্বিতীয় আর্ধে তিনি বইটি রচনা শুরু করেন।
তার স্মৃতিময় জীবনের প্রথম আর্ধ অর্থাৎ ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত এই বইটির উপজীব্য।
বঙ্গবন্ধু প্রায় একেবারেই শুরুতে বংশ পরিচয় দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় শেখ বংশের গোড়া পতন, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা, বসতবাড়ি ঘরবাড়ির বর্ণনা চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
মোহল আমলে তৈরী দালান বাড়ি যে শেখ বংশের সুদিনের পরিচয় বহন করে আবার সময়ের সাথে সেই সুদিন হারিয়ে দালানবলি হারিয়েছে, এক ভাঙা দালানে সর্বপুর বসত করে। কী অসাধারণ সাবলীল ভাবে বলেছেন তা ভাবলে অবাক লাগে।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে তিনি গভীরভাবে সম্মান করতেন। ১৯৪১ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের কনফারেন্সে তিনি কাজী নজরুল ইসলামকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখন তিনি নজরুলের কণ্ঠে গানও শুনেন। পরবর্তীতে তিনি নজরুলকে বাংলাদেশে এনে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়ে নাগরিকত্ব প্রদান করেন।
মুজিব ছাত্র রাজনীতিতে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যায়নকালে তিনি এতো জনপ্রিয় ছিলেন যে তার মনোনীত প্রার্থীর কাছে অফিশিয়াল ছাত্রলীগের প্রার্থীও পরাজিত হতো। এরপর মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে কেউই আর নির্বাচন করতো না।
কী সরলভাবে বলেছেন বাবার থেকে টাকা নেওয়ার কথা, বোনের থেকে টাকা নেওয়ার কথা, এবং কি স্ত্রী রেণুর থেকেও টাকা নেওয়ার কথা।
আত্মজীবনি লিখার সময় কত বড় বড় লেখক লুকিয়ে রাখেন কতো কথা। অথচ বঙ্গবন্ধুর মতো এতো বিশাল ব্যক্তিত্ত্ব কোনো লুকোছাপা না করেই কতো সহজেই বলতে পারেন এক টিকিটে তিন জনের ট্রেন যাত্রার কথা। এখানেই তার মহত্ত্ব, এখানেই তিনি সত্য সাধক।
আসলেই প্রত্যেক সৃষ্টিশীল পুরুষের জীবনেই একজন অসামান্য সমার্থক ব্যাক্তি থাকে। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী যার ডাক নাম ছিলো রেণু। সর্বদা সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। ব্যাক্তিগত লোভ-লালসার উর্ধ্বে ওঠে জীবনকে কিভাবে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করতে হয় তার প্রত্যাক্ষ প্রমাণ মেলে গ্রন্থটিতে।
নিজের জীবন, দেশ প্রেমের জন্য উৎসর্গ করতে গিয়ে ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে প্রায় ভুলতে বসেছিলো। শেখ কামালের সেই মর্মস্পর্শ বাণী “হাচু আপা হাচু আপা, তোমার আব্বাকে একটু আমি আব্বা বলি” একজন পিতার কাছে এরচেয়ে আর বেদনার কী হতে পারে!
দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, একটি স্বাধীন দেশের জন্য তিনি নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। নিজের জীবনের কথা ভাবেননি, পরিবারের কথা ভাবেননি, আপনজনের কথা ভাবেননি। তিনি ভেবেছিলেন এই দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পরতে পরতে সে কথাই ছড়িয়ে আছে৷ বাংলাদেশের রাজনীতি ও সাহিত্যে এই বইটি চিরকালই কাল উত্তীর্ণ। আর তার ভেতর লুকিয়ে আছে সাধারণের ভেতর অসাধারণ এক মুজিব হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
নয়া চীন ভ্রমণ Pdf download